শেখ মাহতাব হোসেন:: খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা মাটিবিহীন সবজি চাষে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। এ পদ্ধতিতে খুব সহজে ও কম খরচে বাসা-ফ্ল্যাটে নানা ধরনের সবজি চাষ করা যাবে। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা হচ্ছে, যা দেখার জন্য গবেষণা কেন্দ্রে প্রতিনিয়ত উৎসুক মানুষ ভিড় করছে। এ পদ্ধতিতে প্লাস্টিকের পাত্রে পানি দিয়ে সবজির চাষ করা হয়। তবে পানিতে মেশাতে হয় উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় উপাদান।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আইয়ুব হোসাইন খান জানান, পাত্রে পানি দিয়ে সবজি চাষকে হাইড্রোপনিক পদ্ধতি বলে। নগরীর বাসা-ফ্ল্যাটের বারান্দা ও করিডরে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা যাবে। এতে বিশুদ্ধ সবজি মিলবে।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ জানান, এ পদ্ধতিতে শসা, করলা, লেটুস ও চাল কুমড়া ভালো উৎপাদন হয়। এসব সবজি গাছে পোকার আক্রমণ ও রোগ কম হয়ে থাকে। খরচ ও খুব বেশি নয়।
পদ্ধতি সম্পর্কে ডুমুরিয়া উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ওয়ালিদ হোসেন বলেন, প্লাস্টিকের একটি বাক্সে পানি দিয়ে তার ওপর ককসিট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। ককসিট ছিদ্র করে তাতে ফোম দিতে হয়। ফোমে চারা লাগানো হয়। এছাড়া ককসিটের ছিদ্রে প্লাস্টিকের গ্লাসে পাথর দিয়ে বীজ বোনা যায়। মূল বিষয়টি হচ্ছে উদ্ভিদ মাটি থেকে যে ১৬টি উপাদান গ্রহণ করে তা পানিতে মেশাতে হবে। সেগুলো স্টক সলিউশন এ ও বি নামে ঢাকায় পাওয়া যায়। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রেও এসব সলিউশন পাওয়া যাবে।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, প্লাস্টিকের একটি বাক্সের দাম পড়বে ৩০০ টাকা, ককসিট ও ফোম ১৫০ টাকা, স্টক সলিউশন এ ও বি ৬০০ টাকা। একটি প্লাস্টিকের বাক্সে ছয়টি চারা লাগানো যাবে। উৎপাদন সময় ও সবজির স্বাদ মাটিতে লাগানো সবজির মতোই।
এ বিষয়ে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামের আদর্শ কৃষক ও এলাকার সৌখিন সবজি চাষি তাপস সরকার বলেন, মাটি ছাড়া সবজি চাষের আগ্রহ দীর্ঘদিনের। ইউটিউবের মাধ্যমে কিছু ধারণা নিয়েছি। তবে সরাসরি কোনো কৃষিবিদের নিকট থেকে পরামর্শ পেলে আরও ভালো হতো।
এ ব্যাপারে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো.ওবায়দুল্লাহ কায়সার বলেন, খুলনার ডুমুরিয়ায় মাটিবিহীন সবজির চাষের বিষয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে নগরীর বাসা-ফ্ল্যাটে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করা যাবে। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে এ পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিটি দেখার জন্য গবেষণা কেন্দ্রে প্রতিনিয়ত উৎসুক লোকজন আসছেন। কেউ এ পদ্ধতিতে চাষে আগ্রহী হলে আমরা পরামর্শ দিবো।