খান মহিদুল ইসলাম :: ডুমুরিয়ার অসাধু চিংড়ি ডিপো ব্যবসায়ীরা রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার আশায় ওজন বাড়াতে চিংড়ি মাছে অপদ্রব্য পুশ করে চলেছে।
পুলিশ, সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ডুমুরিয়া বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবাধে সাদা সোনা খ্যাত চিংড়িতে অপদ্রব্য (জেলি, সাগু, পানি, পাউডার, সাদা লোহা) পুশ করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। আর এ কাজ করে রাতারাতি তারা কোটিপতি বনে যাচ্ছেন।
অতি মুনাফার লোভে এসব ব্যবসায়ী চিংড়িতে অপদ্রব্য প্রবেশ করানোর কারণে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে চলে যাচ্ছে অপদ্রব্য পুশকৃত চিংড়ি। ফলে একদিকে যেমন ঠকছেন দেশি ক্রেতারা অন্যদিকে বিদেশি ক্রেতারা এদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি দ্রব্য হিমায়িত চিংড়ি আমদানিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন এ অঞ্চলের রপ্তানিকারকরা।
ডুমুরিয়া উপজেলা মৎস্য অফিসের মাধ্যমে মাঝে মধ্যে অভিযান চালানো হয়। মাছের ডিপোতে অভিযান পরিচালনার খবর আগেই পেয়ে যান সিন্ডিকেট ডিপো মালিক। এলাকাবাসীর বক্তব্য সরিষার ভিতর ভূত। সুধীজনের মতে,মৎস্য সংশ্লিষ্ট ও বাজার কমিটির গাফিলতির কারণে ডুমুরিয়া সদর বাজারে ডিপো ব্যবসায়ীরা চিংড়িতে জেলি পুশ করার সুযোগ পাচ্ছে। ডুমুরিয়া সদরে জেলি পুশ বন্ধ করতে পারলে উপজেলার অন্যান্য এলাকায় আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাবে।
ডুমুরিয়া বারোয়ানী বাজারের আহবায়ক শ্যামাল কুমার দাস ও সদস্য সচিব খান মহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাজারের সকল ডিপো মালিকদের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া সত্বেও আমাদের অগচরে এ গুলো করছে।
এ বিষয় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আবুবকর সিদ্দিক বলেন, চিংড়ী মাছে পুশ’র বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। তারপরও অসাধু ব্যবসায়ীদের দমন করতে হিমসিম খেয়ে যাচ্ছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, ১৯টি দেশে চিংড়ি রপ্তানি করা হয়। দেশগুলো হচ্ছে জাপান, ফ্রান্স, নেদারল্যান্সস, জার্মানি, বেলজিয়াম, তাইওয়ান, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, চীন, ইটালি, মারিশাস, ইউএই, পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া, সাইপ্রাস ও ডমিনিকান রিপাবলিক। সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় বেলজিয়াম ও ফ্রান্সে।
কয়েক দফায় এসব দেশে পুশকৃত চিংড়ি রপ্তানি করায় অনেক দেশ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। আবার কেউ কেউ রেড এলার্ট জারি করেছে। আর এতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি দ্রব্য চিংড়ি শিল্পে বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এলাকার ঘের ব্যবসায়ী।