শেখ মাহতাব হোসেন :: ডুমুরিয়া (খুলনা)জীবন যুদ্ধে জন্মান্ধ আপন তিন সহোদর। সূর্যের আলো দেখার সৌভাগ্য হয়নি আজও জন্মাদ তিন সহদরের। তাইতো জীবন- জীবিকার তাগিদে তাদের প্রতিক্ষণ করতে হচ্ছে সংগ্রাম। অন্ধ অবস্থায়ই একে একে ভূমিষ্ট হন একই মায়ের কোলে তিন সন্তান জন্ম থেকে তারা অন্ধ হয়ে আসে পৃথিবীতে। ঘটনাটি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামের দরিদ্র ঋষি পদ্মার। পিতা পরিমল দাসের ঔরশজাত এবং মাতা পাতা রানী দাসের গর্ভে জন্ম নেয়া শঙ্কর দাস (২৮), দীপঙ্কর দাস (২৫) ও শুভঙ্কর দাস (২২)। অন্ধ অবস্থায়ই এরা জন্ম গ্রহণ করেন। ভূমিহীন ও ঘরহীন হতদরিদ্র পিতা- মাতাসহ তারা তিন ভাই নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য জীবন যুদ্ধের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। দু’চোখে কিছুই দেখে না তারা। প্রাকৃতির এই অভিশপ্ত জীবন যেন ওই পরিবারের জন্যে বড় বোঝা হয়ে পাঁড়িয়েছে। কি করবে তারা? জন্মান্ধ তিন সন্তান না পারে চলতে ফিরতে? না পারে কোন আয়- উপার্জন করতে? তবে দরিদ্র পিতা-মাতা দৈনিক শ্রম বিক্রি করে তবে চাল-ডাল কিনে অতি কষ্টে তাদের মুখে দু’বেলা দুমুঠো ভাত তুলে দেয়ার প্রাণপন চেষ্টা করে আসছেন। আর শ্রম বিক্রি করতে না পারলে সেদিন অনাহারে দিনাতিপাত করতে হয় ৮ সদস্যের ওই পরিবারটির। জন্মান্ধতা যেনো বড় একটি অভিশাপ তাদের। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তারা আপন তিনটি ভাই মাতৃ গর্ভ থেকে অন্ধ অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করেন। যা কোন প্রকার চিকিৎসার জন্য উপযোগী নয়। ফলে অন্যের সাহায্য নিয়ে তাদের চলাফেরা করতে হয়। তাদের নেই কোন শখ, নেই কোন বেড়ানোর চাহিদা, দেখতে না পারলে যেমনটি হয়?
ইন্দ্রিয় অনুভূতি এবং অন্যদের সহযোগিতা নিয়ে বাড়ির গন্ডির ভিতরে তাদের চলা। বুক ভরা কষ্ট আর হতাশায় জীবন কাটছে চির জন্মান্ধ তিন সহদরের। তাছাড়া হতদরিদ্র পিতা-মাতার নেই কোন পৈতৃক জমি, নেই বসবাস যোগ্য ঘর-বাড়ি। সরেজমিন এ সকল তথ্য পাওয়া গেছে। দেখা যায় জরাজীর্ণ একটি খুপড়ি ঘরে তারা মানবেতর ভাবে বসবাস করে আসছে। চোখের দৃষ্টি শক্তি কোন দিন ফিরে পাবো? না পাবো না? এমন কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন, এ প্রতিবেদকের সামনে জন্মান্ধ তিন সহোদর। যা বড্ড হৃদয় বিদারক। মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বজ্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের জন্য জোর আকুতি জানিয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করেছেন।