ডুমুরিয়ার ঘোনা মাদার ডাঙ্গা অঞ্চলে নির্বিকারে চলছে পাখি নিধন। পেশাদার শিকারিরা রাতে বিশেষ ধরনের জাল পেতে নানা প্রজাতির পাখি নিধন করে সকালে গ্রামাঞ্চলে ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে সেই পাখি। আর পাখি নিয়ে কাজ করা কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিছু পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করলেও স্থায়ীভাবে এখনও ঘোনাবিলঞ্চলে পাখি নিধন ও বিক্রি বন্ধ হয়নি।
বুধবার (২২নভেম্বার) পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ আইনে ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আশিষ মোমতাজ নেতৃতে ডুমুরিয়া উপজেলার ধামালিয়া ইউনিয়নের ইউনিয়নের চেচুড়িয়া গ্রামে সরোয়ার আলমের নিকটথেকে ১৯টি ঢংকুর ও ১টি হাঁস হাতেনাতে আটক করে তাকে নগদ ৫হাজার টাকা জরিমানা ও ২০টি পাখি অবমুক্ত করেছেন।
ডুমুরিয়া অঞ্চলে পাখিসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ঘোনা মাদার ডাঙ্গা অধ্যুষিত ও ডুমুরিয়া উপজেলা এলাকায় পাখি শিকার বন্ধে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর তথ্য চিত্র দেখলে বোঝা যায় বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর বিপুল সংখক পাখি শিকার হয়। ‘ডুমুরিয়া জীব ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সহ-সভাপতি সাংবাদিক শেখ মাহতাব হোসেন জানান, তাদের স্বেচ্ছাসেবীরা ২০২০ সালে ৩০ জন পাখি শিকারির থেকে পাখি শিকার না করার মুচলিকা নেন। এ সময় তারা বক, ঘুঘু, শ্যামকৈলসহ বিভিন্ন প্রকার শিকার করা ৩শত পাখি অবমুক্ত করেন। ২০২১ সালে ২০ জন পাখি শিকারির থেকে মুচলিকা নেন। পাশাপাশি শিকার করা প্রায় ৫শত মতো পাখি অবমুক্ত করেন। আর গত ৯ মাসে শিকার করা এক হাজার পাখি অবমুক্ত করেন ও ৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে প্রায় ৭ জন শিকারি আর্থিক জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থা করেন। তিনি দাবি করেন, তারা গত ১০ বছরে ডুমুরিয়া এলাকায় শিকার করা প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার পাখি অবমুক্ত করেছেন।
জীব ও বৈচিত্র্য রক্ষায় ডুমুরিয়া অঞ্চলে কাজ করেন আরেকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বাধীন জীবন। স্বাধীন জীবনের রক্ষায় কাজ করছেন। তারা শিকার করা পাখি অবমুক্ত করলেও তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনার অভাবে ডুমুরিয়া অঞ্চলে স্থায়ীভাবে পাখি শিকার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এখন ডুমুরিয়া অঞ্চলে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নির্বিচারে বিভিন্ন ধরনের পাখি নিধন। শিকারির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বক থেকে শুরু করে ঢংকুর, হাঁস পাখি ভাড়ই, রাতচোড়া, টোগা, বালিহাঁস, পানকৈড়, পারিযাতসহ দেশীয় প্রজাতির অনেকে পাখি। আর বর্তমানে চলনবিলের বিভিন্ন গ্রামে প্রতি এক জোড়া ভাড়ই বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা, প্রতি জোড়া বালিহাঁস ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, টোগা প্রতি জোড়া ৯০ থেকে ১১০ টাকা, রাত চোরা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা প্রতি জোড়া, বক প্রতি জোড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিলাঞ্চলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষকারী পাখি নিধন বন্ধ হক।