খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার একটি পুকুর থেকে ধরা পড়েছে ৩টি ইলিশ মাছ। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইলিশ দেখতে মানুষের ভিড় জমে পুকুর পাড়ে। জলাশয়টির মালিক অনিশ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। শুক্রবার (১৮অক্টোবর) সকাল ১১টায় উপজেলার সাহস ইউনিয়নের লতাবুনিয়া গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল নিশ্চিত করেছেন।
পুকুরটির মালিক অনিশ মণ্ডল বেলা ১০টার দিকে জেলেদের নিয়ে মাছ ধরতে নামেন। তাদের জালে একে একে ৩টি তাজা ইলিশ মাছ ধরা পড়ে। তিনি বলেন, “পুকুরে ইলিশ পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। তবে বিষয়টি অবাক করার মতো। এর আগে আমরা কখনো পুকুরে ইলিশ মাছ দেখিনি। পুকুরে কীভাবে ইলিশ এলো তা আমাদের জানা নেই।”
স্থানীয় প্রবীণ জেলে সুকুমার বলেন, “নদীর সঙ্গে ওই পুকুরের সরাসরি কোনো সংযোগ নেই। মাঝে ঘের রয়েছে। ঘেরে নদী থেকে পানি তোলা হয়। আবার বর্ষায় সব পানিতে একাকার হয়ে যায়। তবে, এই পুকুরে ইলিশ পাওয়া গেল।”
ডুমুরিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান রিগান বলেন, “পুকুরে ইলিশ হয় বিষয়টি এমন নয়। জোয়ারের পানি পুকুরে প্রবেশ করলে তখন নোনা পানির সঙ্গে ইলিশও প্রবেশ করতে পারে।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রশান্ত মল্লিক বলেন, “বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রসঙ্গ না। অনিশের পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে এটাই সত্য।”
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, “পুকুরে ৩টি ইলিশ মাছ পাওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি ইলিশের গড় ওজন ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম।”
মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, “চটচটিয়া নদীর ১০০ ফুট দূরে অনিমেষের ১২০ শতক জমির একটি ঘের রয়েছে। এই ঘেরে জোয়ারের সময় পানি তোলা হয়। এ কারণে জোয়ারের পানির সাথে জাটকা ঘেরে আসতে পারে। আর ওই ঘেরের পাশেই অনিশের পুকুর। সেখানে ৬-৭ ফুট পানি থাকে। ঘেরের পানি ওই পুকুরে মেশে। আবার বর্ষার সময় এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে পানির সঙ্গে জাটকা নদী থেকে ঘের হয়ে পুকুরে আসতে পারে।”
“আর ইলিশ গভীর পানির মাছ। যেহেতু ছোট পোনা পানির সাথে ঢুকে পড়ে। তাই বদ্ধ জায়গাতে ৬-৭ ফুট পানিতে ওরা খাপ খাইয়ে নিয়েছিল।” বাণিজ্যিকভাবে পুকুরে ইলিশ চাষ নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে সুখবর পাওয়া যেতে পারে বলে জানান জয়দেব পাল।