শেখ মাহতাব হোসেন: খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ফলের বাজার ভরা মৌসুমেও সাধারণের নাগালের বাইরে। বিক্রেতারা বলছেন, বাংলাদেশে তীব্র দাবদাহের কারণে এবার ফলন ভালো হয়নি। সরবরাহ কম থাকায় ফলের দাম বেড়েছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে এই সময় ফলে ভরপুর থাকে। বাজারে যে দাম থাকার কথা এবার সে তুলনায় দাম অনেক বেশি।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, জাতভেদে প্রতি কেজি আম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকায়। সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে আম্রপালি জাতের আমের। মানভেদে প্রতি কেজি আম্রপালি আম ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মান ও সাইজভেদে প্রতি কেজি ফজলি আম ৯০ থেকে ১১০ এবং ল্যাংড়া ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লক্ষণভোগ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রত্না জাতের আম সর্বনিম্ন ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে হিমসাগর বা গোপাল ভোগ আমের বাজার প্রায় শেষ। তবে কিছু কিছু দোকানে আম পাওয়া গেলেও দাম চড়া। প্রতি কেজি হিমসাগর আম আকারভেদে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁড়িভাঙা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। কোনো জাতের আমই ১০০ টাকা কেজির নিচে বিক্রি হচ্ছে না। দেশীয় বাজারে আমের এই ঊর্ধ্বমূল্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। পাশাপাশি আমের মূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার আহ্বান জানান তারা।
রসালো ফল লিচু এখন শেষের দিকে। বর্তমানে ১০০ পিস লিচু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। এ ছাড়া দেশি ফলের মধ্যে প্রতি কেজি ডেউয়া ২০০, আমড়া ১০০, জামরুল ১৮০, ছবেদা ২০০, জাম ১৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে প্রতিটি কাঁঠালের দাম ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। তালশাঁস প্রতি পিস ৩০ টাকা এবং আনারস বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। ড্রাগন ফল ৩০০ টাকা কেজি, পাকা পেঁপে ১৫০, পেয়ারা ৬০ থেকে ১০০ এবং লটকন কার ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেখা গেছে। বিদেশি ফলের বাজারে আগে সবুজ আপেল প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা। লাল আপেল পাওয়া যাচ্ছে এখন ২৫০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে। প্রতি মার কেজি কমলা ৩০০-৩২০ টাকা, আঙুর ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, নাশপাতি ২৫০ হত্যা থেকে ৩০০ এবং আনার ৪৫০ থেকে ভারে ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন রকমের খেজুর বিক্রি মনে হচ্ছে ১৬০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি। আর ২৫০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি মাল্টা গত রোজার মধ্যে এই মাল্টার দাম উঠেছিল ৩৮০ টাকা পর্যন্ত।
ডুমুরিয়া বাজারের খুচরা ফল ব্যবসায়ী ইমন খান বলেন, পাইকারিতে বেশি দামে কেনার কারণে আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। পাইকারিতে দাম কমলে আমরাও ক্রেতাদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে পারব।
আম বিক্রেতা আলা-আমিন বলেন, এবার আমের ফলন ভালো হয়নি। তাই এখন পর্যন্ত আমের দাম বেশি। তবে ভালো জিনিসের দাম তো একটু বেশি হবেই। ঐ আমরা যে দামে আম কিনে আনি তার চেয়ে অল্প কিছু লাভ করেই বিক্রি করে দিই। এই আমের কিছু নষ্ট হয় তাতে লাভের পরিমাণ কিছুটা কমে আসে। আমাদের হাতে তো দাম বাড়ানো বা কমানোর কিছু নেই।
মোসলেম নামের ক্রেতা বলেন, সবকিছুতে যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে আর কিছুই খাওয়া যাবে না। আমাদের দেশের আম আমরাই কিনে খেতে হিমশিম খাই। ১ কেজি আমের যদি এত দাম হয় তাহলে মানুষ কিনবে কীভাবে।