সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা রবিবার , ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ডুমুরিয়ায় ভরা মৌসুমে আবারো চাইলে মূল্য বৃদ্ধি | চ্যানেল খুলনা

ডুমুরিয়ায় ভরা মৌসুমে আবারো চাইলে মূল্য বৃদ্ধি

শেখ মাহতাব হোসেন:: ডুমুরিয়া (খুলনা) রমজান আসতে বাকি আরো দুমাস। এরই মধ্যে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে চালের দামে। সরকারি পর্যায়ে রেকর্ড মজুতের পাশাপাশি মাস-দেড় মাস আগে গোলায় উঠেছে আমন ধান। ধানের এই ভরা মৌসুমে চালের দাম নিন্মমুখী হওয়ার কথা, কিন্তু হয়েছে উল্টো। সংকট না থাকলেও কারসাজি ও গুজবের মাধ্যমে অস্থির করে তোলা হচ্ছে দেশের চালের বাজার। নির্বাচনের পর গত সাত দিনে প্রকারভেদে প্রতি বস্তা চালের দাম বেড়েছে দেড়শ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ভোক্তা।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিল গেট থেকেই বেশি দামে তাদের চাল কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া তাদের উপায় নেই। এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু মিল মালিকদের দায়ী করছেন তারা। আবার মিলমালিকরা বলছেন, নির্বাচনের পর ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের দাম বাড়াতে হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্বাচনের সময় পরিবহন সংকট ছিল। এখন বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসায় তারাও দাম কমিয়েছেন। এখন ক্রেতা পর্যায়ে চালের বাড়তি দামের জন্য পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের দায়ী করছেন তারা। এখনই এ অবস্থা হলে, রোজার সময় দাম নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে এসব নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারকে জোর দেয়ার তাগিদ দেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই চালের দাম কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। গত রবিবার প্রথম কার্যদিবসে তিনি বলেন, ধান-চালের অবৈধ মজুতবিরোধী অভিযান জোরদার করবে সরকার। চালের বাড়তি দর কমিয়ে আনা হবে। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নতুন কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হবে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে ধান উৎপাদন ভালো হয়েছে। আমাদের খাদ্যমজুতও ভালো। বাজারে প্রচুর সরবরাহ আছে। তবে মিলাররা প্রতিযোগিতা করে ধান কেনায় প্রতিনিয়ত চালের দাম বাড়ছে। এ অশুভপ্রতিযোগিতা বন্ধ করতে খাদ্য মন্ত্রণালয় দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। চালের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের কারসাজিকে দায়ী করে চাল ব্যাবসায়ী শেখ আব্দুস সালাম বলেন, এ সময় চালের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। এর পেছনে কারো না কারো কারসাজি রয়েছে। সরকার এদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিলেই পরিস্থিতি আগের অবস্থায় চলে আসবে।

তিনি বলেন, চালের সংকট না থাকায় এখনই চাল আমদানি উৎসাহিত করতে আমদানি শুল্ক কমানো ঠিক হবে না। কারণ যারা বাজারে কারসাজি করছে- তারাই অপেক্ষায় রয়েছে এই সুযোগ নেয়ার জন্য। তার আশঙ্কা, কম শুল্কে বিদেশি চাল দেশের বাজারে ঢুকলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তিনি আরো বলেন, বিগত দিনেও বাজারে কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী দায়ীদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেবেন বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, যারা দেশে কোনো পণ্যের দাম বাড়ানোর কোনো কারণ লাগে না। ব্যবসায়ীদের ইচ্ছে হলেই দাম বাড়িয়ে দেয়। না হলে এই ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। তিনি বলেন, সরকার ও মানুষ নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, নানামুখী কারসাজির মুখে পড়েছে দেশের চালের বাজার। মাঠে উৎপাদিত আমন ধান সবেমাত্র গোলায় ফিরেছে। এর মধ্যেই চালের দাম লাগামহীন। কারণ করপোরেট হাউসগুলো বাজার থেকে ধান কিনে গুদামে মজুত করছে এবং কারসাজি করে চাল বাজারে ছাড়ছে না। তাই চালের দাম গত কয়েকদিনে বেড়েছে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) দেড়শ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগের মুহূর্ত পর্যন্ত পুরোপরি স্থিতিশীল ছিল দেশের চালের বাজার। কিন্তু নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু করে মন্ত্রিপরিষদের শপথ নেয়ার পর চালের বাজার আবারো অস্থির হয়ে ওঠে। লাগামহীন হয়ে ওঠে সব ধরনের চালের দাম। ১১ জানুয়ারি শপথ নেয়ার দিনই দাম বাড়ানো হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে, ৫০ কেজির প্রতি বস্তা নূরজাহান ২০০ টাকা, সিদ্ধ মিনিকেট আড়াইশ টাকা এবং দেশি বেথির দাম ৪০০ টাকা বেড়েছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, করপোরেট হাউসগুলো বাজার থেকে ধান কিনে নিজেদের গুদামে মজুত করায় বাজারে চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এর মাঝে খাদ্য সংকটের গুজব রটিয়ে কিছু কিছু মোকাম মালিকও চাল মজুত করছে। এর আগে, গত ৬ জানুয়ারি পাইকারিতে সিদ্ধ চালের মধ্যে প্রতি বস্তা জিরাশাইল ছিল ৩ হাজার ১৫০ টাকা, পাইজাম ২ হাজার ৫০০ টাকা, নূরজাহান ২ হাজার ৩০০ টাকা, মিনিকেট ২ হাজার ৩৫০ টাকা, ভিয়েতনাম বেতি ২ হাজার ২৫০ টাকা এবং দেশি বেতি ২ হাজার ৪০০ টাকা। যেখানে ১৪ জানুয়ারি প্রতি বস্তা জিরাশাইল ৩ হাজার ৩০০ টাকা, পাইজাম ২ হাজার ৬৫০ টাকা, নূরজাহান ২ হাজার ৫০০ টাকা, মিনিকেট ২ হাজার ৭০০ টাকা, ভিয়েতনাম বেতি ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং দেশি বেতি ২ হাজার ৮০০ টাকায় উঠে গেছে।

ডুমুরিয়া বাজারে চালের পাইকারি ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী তপন বলেন, নির্বাচনের পরেরদিন মিলাররা হঠাৎ কারসাজি করে চালের দাম বস্তায় ২৫০ টাকার বেশি বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়েও চালের দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, সাধারণত যখন চালের দাম বাড়ে, তখন এক লাফে বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে বাড়ে। কিন্তু এবার এক লাফে বস্তাপ্রতি প্রায় ৩০০ টাকার মতো বাড়িয়ে দিয়েছেন মিলাররা।

এ ব্যাপারে খুলনা চালের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার বাজারের চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারেও বাড়তি দামে ধান কিনেছেন মিলারদের। এতে চালের দাম বাড়তি। মিলাররা বস্তাপ্রতি চাল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। আমন মৌসুম সবেমাত্র শেষ হয়েছে, এরই মধ্যে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

তিনি বলেন, বাজারে প্রায় সব পণ্যের দাম কয়েক দফা বাড়লেও চালের দাম স্থিতিশীল ছিল। এখন নতুন করে চালের দাম বাড়ায় আমাদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াবে। বাজারে সরকারের নজরদারি তেমনভাবে না থাকায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমনের উৎপাদন আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বাজারে আমনের চাল সরবরাহও হয়েছে ডিসেম্বরের শুরু থেকে। চলতি আমন মৌসুমে প্রায় এক কোটি ৭১ লাখ ৭৮ হাজার টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল কৃষি সাপ্রসারণ অধিদপ্তর। মোট ৫৮ লাখ ৭৪ হাজার হেক্টর জমিতে এ বছর ধানের আবাদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাটা হয়েছে ৫৭ লাখ ২৭ হাজার হেক্টর বা সাড়ে ৯৭ শতাংশ জমির ধান। এখান থেকে চাল উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৭০ লাখ ৯৩ হাজার টন। গড় ফলন হয়েছে হেক্টরপ্রতি ২ দশমিক ৯৮ টন। গত বছরের শেষ দিকে পোকামাকড় এবং ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ও মিগজাউমের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির ধান।

এদিকে স্বল্পআয়ের মানুষকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে চাল বিতরণ করছে সরকার। চলতি অর্থবছরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এসব কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির কার্যক্রমও। বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রথমবারের মতো সরকারের এই সংস্থা তাদের পণ্যে চাল যুক্ত করেছে, যা অনেক কম মূল্যে পাচ্ছে ক্রেতারা। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে সরকারিভাবে চাল বিতরণ হয়েছে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সরকারি বিতরণ বাড়ায় চাল বিক্রি কমে গেছে। এ কারণে কয়েক মাস চালের দাম না বাড়লেও মিলপর্যায়ে সিন্ডিকেট করে এখন দাম বাড়ানো হচ্ছে। চালকল মালিকরা বলছেন, এবার আমনের মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকেই তাদের বাড়তি দামে চাল কিনতে হয়েছে। এতে তারা আগের চেয়ে কিছুটা দাম বাড়িয়ে বাজারে চাল বিক্রি করছেন।

https://channelkhulna.tv/

খুলনা আরও সংবাদ

ভেদাভেদ ভূলে দ্বীনে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় সকল আলেমদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: মাওঃ রফিকুল

খুবিকে ইমপ্যাক্টফুল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে, গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা

বেগম খালেদা জিয়া এখন বাংলাদেশের সবচাইতে মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তি : আজিজুল বারী হেলাল

জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সকলকে সর্তক, সজাগ থাকতে হবে: তুহিন

নিশ্চিত মৃত্যু যেনেও ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বায়ুপথে ইয়াবা বহন আটক এক

খুলনা বিভাগীয় বইমেলা শুরু ২৬ নভেম্বর, চলবে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।