শেখ মাহতাব হোসেন:: ডুমুরিয়ার ভদ্রা নদীর উপর ৫৭ মিটার দীর্ঘ আর সি সি গাডার ব্রিজ মুক্তিযোদ্ধা অফিস সংলগ্ন খুলনা বাগেরহাট সাতক্ষীরা প্রকল্পের মাধ্যমে এলজিডির ডুমুরিয়া তত্ত্বাবধায়নের কাজ চলছে।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার অবহেলিত ডুমুরিয়া শোভনা সহ ৫ গ্রামের চিত্র। যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সুপেয় পানির ব্যবস্থা, মসজিদ-মন্দির, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎসহ সকল সেক্টরে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। জানা যায়, ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত শোভনা ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম। এই শোভনা ব্রিজটি হলে এলাকায় বিপুল পরিমাণ উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে।
ব্রিজ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাঃ রবিউল ইসলাম জানান, প্রায় ৫ কোটি ৫৭লক্ষ টাকার কাজ হচ্ছে। এই ব্রিজের কাজ শেষ হলে এলাকার ৫ গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে। ডুমুরিয়া, শোভনা, চিংড়া, শিব পূর্ বাদুড় গাছা,সহ আরো অন্যান্য গ্রামের স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও প্রান্তিক কৃষকসহ সকল স্তরের জনসাধারণের উন্নয়নের ভূমিকা পালন করবে।
এই ব্রিজের কাছে মুদি ব্যবসায়ী শংকর সানা জানান, নদী বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এই এলাকায় ধান, পাট, শাক- সবজি, ফলমূলসহ ৫ গ্রাম মিলে প্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষের বসবাস। শহর থেকে এলাকাটি দূরে হওয়ায় এখন পর্যন্ত উন্নয়নের তেমন কোন ছোঁয়া পড়েনি এখানে। চলাচলের ভালো কোন ব্রীজ না থাকায় এলাকার মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এখানকার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম ছিলো নৌকা। নৌকাযোগে তারা গ্রামের এ বাড়ি ও বাড়ি বা শহরে যাওয়া-আসা করতো। রাস্তাঘাট যা একটু আধটু ছিলো তা বর্ষাকালে হাটু কাঁদা হয়ে যেতো। ফলে শহরের সাথে এলাকার মানুষের যোগাযোগ একেবারই কম ছিলো। সেই সময় অনেক অসুস্থ রোগীকে অকালে প্রাণ হারাতেও হয়েছে চিকিৎসার অভাবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে একসময় কুলটির মানুষ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি তা বদলে গেছে। প্রায় ৫ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার ব্রিজসহ উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নের পথে।
সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ূন কবির বুলু বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সুফল পুরোপুরিভাবেই পাচ্ছেন ডুমুরিয়া ইউনিয়নবাসী। এ উন্নয়ন কর্মকান্ড সুসম্পন্ন করতে প্রত্যক্ষভাবে মাননীয় ভূমি মন্ত্রী খুলনা- ৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র যেভাবে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন তাতে ডুমুরিয়া ইউনিয়নসহ ৫ গ্রামের মানুষ তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকবে। এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শহরের সাথে প্রত্যন্ত এই অঞ্চলটির সেতু বন্ধন হতে যাচ্ছে। ভদ্রা নদীর উপর ৫কোটি ৫৭ লক্ষ টাকায় ৫৭মিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রিজ নির্মাণ প্রায় শেষের পথে। আগামী ২০২৪ সালের শেষের দিকে শেষ হবে। এটা হলে দুই জেলা শহর তথা খুলনার মানুষ ডুমুরিয়া ভায়া হয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ও ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের শোভনা গ্রাম আর অবহেলিত নেই। সরকারের সারাদেশের উন্নয়নের ছোঁয়া ডুমুরিয়া ও পৌঁছে গেছে। একটা সময় সেখানে রাস্তাঘাটসহ উন্নয়নমূলক কিছুই ছিলো না। এখন প্রধামনন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে আমরা শোভনাসহ ডুমুরিয়া উপজেলার প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন করতে পেরেছি। শোভনা আর ডাউন নয়, এখন টাউনে পরিণত হয়েছে। ডুমুরিয়ায় ব্রিজ চালু হলে মানুষ খুব সহজেই খুলনা শহরে পৌঁছাতে পারবে। এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় দুটোই হবে।