খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় বোরো ধান চাষাবাদের কাজ শুরু করেছেন কৃষকেরা। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে বোরো চাষে স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা। পৌষ-মাঘ এ দুই মাস বোরো ধান রোপন মৌসুম হলেও এবার আগাম বোরো চাষে ঝুকে পড়েছে কৃষকরা। অধিকাংশ ধান চাষী বীজতলা ও জমি তৈরি কাজে আবার কেউ কেউ ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন গত আমন মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে ধান চাষ ব্যহত হওয়ায় এবার আগাম বোরো ধান চাষ করে পুষিয়ে নিতে ব্যস্ত কৃষকরা। এদিকে সার, জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ায় বোরো চাষে অনেক কৃষক আগ্রহ হারাচ্ছেন। উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহিম সরদার, শাওকির শাওন, গনি মোড়ল সহ অধিকাংশ চাষীরা আমন ধান ঘরে তোলা সম্পন্ন করে আগাম বোরো ধানের চারা জমিতে রোপণ করছেন। চারা রোপণের পাশাপাশি বীজতলা ও জমি তৈরি করছেন তারা। তেলের দাম বাড়ায় বেশিরভাগ কৃষক বিপাকে পড়েছেন।
গত বছরের তুলনায় এবার সার, পানি সেচ ও হাল চাষে বিঘা প্রতি (৩৩শতাংশ) ১২শ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় বোরো চাষের জন্যে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সরকারি ভাবে উপজেলার সাড়ে ১১ হাজার কৃষকের প্রত্যেকের এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড, উফশি জাতের ধানবীজ ও সার দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রচন্ড শীতের মধ্যে কৃষকেরা আগাম জাতের বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন, অনেক কৃষক বোরো চাষের জন্যে বীজতলা পরিচর্যা এবং চারা রোপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আবার অনেকেই জমিতে হাল চাষ করছেন। আগাম যারা বীজতলা তৈরি করছিলেন তাদের চারা জমিতে রোপণের কাজ করছেন। তবে ধান উৎপাদনে খরচ বাড়ায় অস্বস্তিতে
বেশিরভাগ কৃষক। উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কৃষক হামিদুর রহমান, সিরাজুল সরদার, আব্দুস সালাম গাজী সহ অনেকে বলেন এবার সময় মত বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ধান চাষ ভাল হয়নি। তাই আগাম বোরো ধান লাগাচ্ছি। তারা আরো বলেন ৬০ শতক জমিতে আগাম হাইব্রিড জাতের ধান রোপন করছি। ধান চাষ করতে এ পর্যন্ত ১০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। এবার সব কিছুর দাম ড়ায় ধান চাষে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। সরকারি কোন সহায়তা পাইনি। পার্শ্ববর্তী মালতিয়া এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক বিশ্বাস জানান, তিনি ৩ বিঘা জমিতে হাইব্রিড ও উফশী জাতের বোরে ধান চাষ করছেন। সরকারি কোন সহায়তা না পেলেও সার-বীজ কিনে ধান চাষ করছেন তিনি।ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, বোরোধান চাষ করার জন্য আমরা কৃষকদেরকে সহযোগিতা ও উৎসাহ দিচ্ছি। এবার সাড়ে ১১ হাজার বোরো ধান চাষীকে সার ও বীজ প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়েছে। এ উপজেলায় আগের তুলনায় বোরো ধান চাষ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করছি নির্ধারিত
লক্ষ্যে মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। উপজেলার অনেক কৃষক আগাম জাতের বোরোধানের চারা রোপণ করতে শুরু করছেন। গত বছরের তুলনায় এবার খরচ কিছুটা বাড়লেও তেমন কোন সমস্যা হবেনা বলে মনে করেন তিনি।