ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনাগুলো সিএ ও আরএস দেখে চিহ্নিত করে ধাপে ধাপে উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়ে সিটি কর্পোরেশন সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালাবে বলে জানান তিনি।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে ঢাকা উত্তর সিটি ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক গৃহীত কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা সভা শেষে নিজ দপ্তরে তিনি একথা বলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে আজ তারা উপস্থাপন করেছে, এজন্য অনেকগুলো প্রকল্প নিতে হবে, সেজন্য তারা মতামতও দিয়েছে। সেজন্য ঢাকার ডিসি, পূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
অনেকগুলো জায়গায় ভুয়া কাগজ তৈরি করে অনেকেই অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম জানান, সবার সমন্বয়ে সিএ এবং আরএস দেখে ফেইস বাই ফেইস, এক মাসের ভেতরে, তৃতীয় ফেইস দুই মাসের ভেতরে, তৃতীয় ফেইস তৃতীয় মাসের ভেতরে সমস্ত জায়গাগুলো চিহ্নিত করে দেবে। সিটি করপোরেশন সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়ে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালাবে।
ঢাকায় বেশকিছু ব্রিজ ও কালভার্ট দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে তাজুল বলেন, সেগুলোকে প্রয়োজনে চিহ্নিত করে পুনর্নিমাণ করা হবে। যেসব বক্স কালভার্টের ভেতরে ২৫ থেকে ৩০ বছরের ময়লা জমে আছে সেখানে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
ঢাকায় এখনও ৩৯টি খালের অস্তিত্ব রয়েছে জানিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, সেগুলোকে সংস্কার করতে আমরা কাজ করছি। এরমধ্যে ২৬টি ওয়াসার কাছে ছিল, ১৩টি খাল পূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের অধীনে আছে। পূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কাছে থাকা খালগুলো যাতে সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয় সেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, খালগুলো সংস্কারে কর্মপরিকল্পনা করতে আজকে সভা ডাকা হয়েছে। দুই মেয়র বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তা বাস্তবায়নে দুই মেয়র খুবই আন্তরিক। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে সবধরনের সহযোগিতা করবো। প্রতিটি সংস্থা যার যার কাজ করবে। আমরা সমন্বিত ভাবে কাজ করবো।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকাকে দৃষ্টিনন্দন শহর রূপান্তরে অনেকগুলো প্রকল্প ও প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে। ওয়াসার কাছে থাকা ঢাকার ২৬টি খাল সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অবৈধ দখল থেকে এসব খাল উচ্ছেদ করে সেগুলোকে সংস্কার করা হবে। সকল খালগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করে দুই পাড় বাঁধিয়ে পায়ে চলার মতো ব্যবস্থা করা হবে। সবগুলো খালের সঙ্গে কানেকটিভিটি করা গেলে ওয়াটার টান্সপোর্ট পরিচালনা করতে পারবো। এতে যেমন উপভোগ্য হবে, সড়কের ট্রাফিক কমবে। খালগুলোর পাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে সেখানে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. সাঈদ নূর আলম ছাড়াও অন্য কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।