নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) খুলনার অঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ নানা বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে(দুদক) অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের পাশাপাশি শিক্ষা বিভাগও বিষয়টি তদন্ত করছেন। তদন্ত কাজে অসহযোগিতার পরেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন ওই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অভিযোগ অনুযায়ি জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠক এর আওতাধীন খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনের শুরু থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আদায় করেন। জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের নিকট থেকে তার অফিসের দুইজন সেসিপ প্রকল্পের কর্মকর্তা হেদায়েত হোসেন ও মশিউর রহমান এবং কর্মচারী সংযুক্তিতে মনিরুজ্জামান মনিরের মাধ্যমে এসব অর্থ আদায় করতেন।
অভিযোগপত্রে ভূক্তভোগীদের অভিযোগ ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম না দিলে এমপিও হবে না বলে জানানো হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বিধি বহির্ভূত বিষয়ভিত্তিক শাখা ও সমন্বয় প্রভাষকদের নিকট থেকে কর্মচারী মনিরের মাধ্যমে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিলেই এমপিও হয়। খুলনা অঞ্চলের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও জেলা শিক্ষা অফিসের শিক্ষক ও কর্মচারী বদলীর জন্য ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। অর্থের পাশাপাশি কোন কোন ক্ষেত্রে মাছ, মাংস ও অন্যান্য জিনিসপত্র উৎকোচ হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। যার অধিকাংশ টাকা হু-ির মাধ্যমে ভারতে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দপ্তরের অফিস সহকারী মোঃ আলীম উদ্দিন মোড়ল ও মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম এর অবৈধ সম্পদ ও অন্যান্য বিষয়েও অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ আমলে নিয়ে ৯ জুলাই দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগসমূহ সরেজমিন তদন্ত পূর্বক সাত কর্মদিবসের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করা হয় বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মুস্তাহিদুল আলম ও একই কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহ আলম ফরাজী। দুদকে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা এবং স্বপদে বহাল থাকায় সুযোগ পেয়েছে তদন্ত কাজে অসহযোগিতার। খুঁটির জোরও দেখিয়েছেন মাউশি কর্মকর্তা। তদন্ত কাজ কোন ভাবেই করতে না পারায় তদন্ত কর্মকর্তা লিখিত প্রতিবেদনও দিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকাজে অসহযোগিতার কারণ দেখিয়ে মাউশি উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠককে অধিদপ্তর থেকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রফেসর শেখ মুস্তাহিদুল আলম বলেন, তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশি খুলনার উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠক বলেন, এ বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি না। দুদক কাজ করছে। কিছু জানতে চাইলে দুদকের সাথে কথা বলতে হবে।