সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শিরাশুনি দাখিল মাদ্রাসার সুপার সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেতু’র পরিচালক ও মাদ্রাসাটির সাবেক সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন জানান, আমি শিরাশুনি দাাখিল মাদ্রাসার সভাপতি হিসেবে দুই দফায় গত ০১.০৪.২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলাম। এর পর থেকে গত আট বছর যাবত আমি ওই মাদ্রাসার সভাপতি নই। এমনকি এই দীর্ঘ সময়কালের মধ্যে কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনও করা হয়নি।
তা সত্ত্বেও মাদ্রাসার সুপার সিরাজুল ইসলাম বারবার ভুয়া কমিটি দেখিয়ে তারিখ ঘষামাজা করে বিগত ৩১.১২.২০১৬ তারিখে আরও একটি ভুয়া কমিটি তৈরি করে মাদ্রাসার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি তার ভুয়া কমিটির সভাপতি হিসেবে আমাকে দেখাচ্ছেন বলে আমি জানতে পারি। যাদেরকে ওই মাদ্রাসা কমিটির সদস্য দেখানো হয়েছে তারাও এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে তিনি জানান। প্রকৃতপক্ষে মাদ্রাসা সুপার সিরাজুল ইসলাম গোপনে আমাদের নাম পদবি ব্যবহার করে এবং আমাদের স্বাক্ষর জাল করে দিনের পর দিন দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে মাদ্রাসাটিকে তার পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
তিনি আরো জানান, ভুয়া কমিটি দেখিয়ে সুপার সিরাজুল ইসলাম জাল কাগজপত্র তৈরি করে গত ২৬.০২.২১ তারিখে মাদ্রাসায় তার পরিবারের তিনজনের নিয়োগ দিয়েছেন। ঢাকা থেকে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি এনে এবং তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমানকে ম্যানেজ করে মাদ্রাসা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাতক্ষীরা শহরের অদূরে তালতলা হাইস্কুলে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ড তৈরী করে এই নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়। সেখানে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা সবাই তার পরিবারের সদস্য। নিজে সুপার হয়েও সহ-সুপার আজিজুর রহমানকে না জানিয়ে তাকে ভারপ্রাপ্ত সুপার দেখিয়ে তার ছেলে সাইফুল ইসলামকে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে, তার আতœীয় শরিফুল ইসলামকে নিরাপত্তা কর্মী ও তার ছোট ছেলের স্ত্রী শাহানাজ মুক্তাকে আয়া পদে নিয়োগ দেয়া হয়। জালিয়াতি কাগজপত্র দেখিয়ে তাদের নামও এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। আমি বিষয়টি জানতে পেরে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া গত শুক্রবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে মাদ্রসা সুপার সিরাজুল ইসলামের অনিয়ম দূর্নীতির তীব্র প্রতিবাদসহ তার উপযুক্ত শাস্তির জোর দাবী জানান।
এবিষয়ে মাদ্রাসা সুপার সিরাজুল ইসলাম জানান, মোঃ আবুল হোসেন এখনও মাদ্রাসার সভাপতি আছেন। না থাকলে তিনি কিভাবে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া তার কথা মতো নিয়োগ না দেওয়ার কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান জানান, আমি অসুস্থতার কারণে নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলাম না। এছাড়া মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলছে।