সংসার বাঁচাতে নিজের ৮ দিনের নবজাতক কন্যাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ কন্যা নবজাতককে হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহ মা শ্যামলী ঘোষকে (৩৫) আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
মঙ্গলবার (১ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুরে নবজাতকের লাশটি ভাসতে দেখে এলাকাবাসি পুলিশকে খবর দেয়। পরে তালা থানা পুলিশ গিয়ে পুকুর থেকে ওই নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে। উদ্ধার করা নবজাতকের লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের মৃত বিষ্টু পদ ঘোষের ছেলে মানিক ঘোষের স্ত্রী শ্যামলী ঘোষ গত ২৫ মে (মঙ্গলবার) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে একটি কন্যাশিশু প্রসব করে। পরের দিন (২৬ মে) বুধবার থেকে তার স্বামী মানিক ঘোষ বাড়ির কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়। এরপর ৩১ মে সোমবার রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের কাছ থেকে নবজাতক শিশুটিও হারিয়ে যায়।
পরের দিন মঙ্গলবার (১ জুন) সকালে বিষয়টি প্রচার হলে টনক নড়ে এলাকাবাসীর। পরিবারসহ গ্রামের লোকজন সম্ভাব্য সব জায়গায় শিশুটিকে ব্যাপক খোঁজা-খুঁজি শুরু করে এবং বিষয়টি প্রশাসনকেও অবগত করেন। এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ টার দিকে বাড়ির পুকুরে শিশুটির লাশ ভাসতে দেখে থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
শ্যামলীর পারিবারিক সূত্র জানায়, মানিক-শ্যামলী দম্পতির এর আগেও তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এবার তাদের কন্যা সন্তান হয়েছে। যে কারনে হত্যা করা হতে পারে নবজাতকটি।
তবে এলাকাবাসীর ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, ৪র্থ বারের মত মেয়ে শিশুর জন্ম হওয়ায় খুশী হতে পারেননি তিনি। তাই বাড়ী ছাড়া হয়েছিলেন। এখন মৃত্যুর সংবাদে বাড়ী ফেরা। তবে সর্বশেষ শ্যামলীকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসতে পারে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য। ধারণা করা হচ্ছে সংসার টেকাতে তারা পরিকল্পিতভাবে শিশুটিকে হত্যা করে থাকতে পারে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বিকাশ মন্ডল জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। শিশুটি হারিয়ে যাওয়ারর খবরে তারা দিনব্যাপী ব্যাপক খোঁজাখুজি করেছিলেন। সর্বশেষ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বাড়ির পুকুরে তার লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দিলে তারা লাশ উদ্ধার ও তার মাকে হত্যার সন্দেহে আটক করেছে।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এর বাইরে এখন কিছু বলা যাবে না।