খুলনার দাকোপে পানখালী ইউনিয়নের পূর্ব পানখালী এলাকার ওয়াপদা বেড়িবাঁধে ভয়াবহ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের একটানা বৃষ্টিপাতের করানে পশুর ও ঝপঝপিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানকার ওয়াপদা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন
দেখা যাচ্ছে। এলাকার মানুষ ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। দ্রুত ভাঙন কবলিত স্থান মেরামত না করলে পানখালী এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়ে আমন ফসল সহ জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে পানখালী ইউনিয়নের পূর্ব পানখালী এলাকায় নদী ভাঙ্গন কবলিত স্থানে গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারে এর অবস্থান। পানখালী থেকে চালনা যাওয়ার পুরতন ওয়াপদা রাস্তাটিতে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতে ওয়াপদা রাস্তার প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ ভেঙে গেছে। স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারনে নদীর পানির বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এখানকার ওয়াপদা রাস্তায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের সময় পানির চাপে ওয়াপদা রাস্তা ভেঙে যেকোন সময় পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে পারে। স্থানীয়রা এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। তারা ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। যে কোন মুহুর্তে ওয়াপদা বাঁধ ভেঙ্গে পানিতে প্লাবিত হতে পারে এলাকা। তারা অতি দ্রুত নদী ভাঙ্গন কবলিত স্থান মেরামত সহ টেকসই বাধ নির্মানের দাবী জানিয়েছেন।
পানখালী এলাকার কিশোর রায় বলেন, ওয়াপদা রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। ৯৫ ভাগ ভেঙ্গে গেছে নদীতে। যদি নদীতে বড় ধরনের জোয়ার হয় তাহলে যে কোন সময় ওয়াপদা ভেঙ্গে এলাকা পানিতে প্লাবিত হবে। এতে আমান ধানের ব্যাপক ক্ষতি সহ সাধারণ মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। তিনি দ্রুত নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা মেরামত সহ টেকসই বাঁধ নির্মানের দাবী জানান। পূর্ব পানখালী এলাকার কৃষ্ণ রায় জানান, এখানকার ওয়াপদা রাস্তাটি অনেক আগে থেকে ঝুঁকি পূর্ণ ছিল। সময় মত কাজ করা হয়নি। যার ফলে এখন আমাদের এত ঝুকির মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। নদীতে আমাদের সব জায়গা জমি চলে গেছে। এখন বাকী রয়েছে শুধু বসত ভিটা টুকু। তাও আবার এখন নদীতে যায় যায় অবস্থা। অনেক কষ্টের সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীর পাশে বসবাস করছি। তিনি নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুত বাঁধ নির্মানের দাবি জানান।
পানখালী এক নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, ওয়াপদা রাস্তার অবস্তা খুবই খারাপ। প্রায় সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে নদীতে। যদি নদীতে বড় ধরনের জোয়ার হয় তাহলে যে কোন সময় ওয়াপদা ভেঙ্গে এলাকা পানিতে প্লাবিত হবে। সাধারণ মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। ইউনিয়নের প্রায় বিশ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়বে । তিনি দ্রুত নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা মেরামত সহ নদী শাসনের মাধ্যমে টেকসই বাঁধ নির্মানের দাবী জানান।
সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ছাবিনা ইয়াসমিন জানান, নদী ভাঙ্গন কবলিত স্থানটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। মুলত এখানে দরকার নদী শাসনের। আগে নদী শাসন করতে হবে। পরে টেকশই বাঁধ নির্মান করতে হবে। তাহলে এলাকায় নদী ভাঙ্গন কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহমেদ বলেন, পূর্ব পানখালী এলাকার ওয়াপদা রাস্তাটি অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ। বিষয়টি পাউবোর কর্মকর্তাদের অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছি। শুধু এখানে নয় গোটা পানখালী ইউনিয়নের বেঁড়িবাঁধ গুলো অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, আমরা দ্রুত ভাঙ্গন রোধ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জিও টিউব ও মাটির কাজ শুরু করা হয়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।