কোভিডের কারণে দুই বছর বিরতি দিয়ে এবার পহেলা বৈশাখে হবে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা। ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’- প্রতিপাদ্যে জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে আবারও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় মুক্তির আনন্দে মিলবে বাঙালি। চারুকলায় চলছে উৎসবের আমেজ। রোজার মধ্যেও দিনরাত উজাড় করে শিক্ষার্থীরা রঙ-তুলির আঁচড়ে আনন্দঘন পরিবেশে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বাঙালির সবচেয়ে বড় সার্বজনীন উৎসব বাংলা নববর্ষের আর মাত্র ৫ দিন। পহেলা বৈশাখে আনন্দে মাতবে সারাদেশ। বর্ষবরণের অন্যতম আকর্ষণ হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা, যা এখন বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। করোনা অতিমারির কারণে গেল দুই বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতে এবার আয়োজন করা হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রা।
করোনা থেকে চিরতরে উত্তরণ ও সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্তির বার্তা নিয়ে এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য- ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’।
চারুকলায় চলছে সাজ সাজ রব। বাঁশ-পেরেকের ঠুকঠাক শব্দ, মাটির সরায় তুলির আঁচড়, কেউ তৈরি করছেন কাগজের পাখি, বাঘ, রাজা, রানি। মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতির কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা।
বর্ণিল বাঘ-সিংহ-হাতি ও পেঁচাসহ নানান কিছু লোকজ ফর্মের মুখোশে রাঙানো হচ্ছে। রমজান থাকলেও বাঙালির প্রাণের মেলা বৈশাখী উৎসবে শামিল হবে সবাই, এমন প্রত্যাশা শিল্পীদের।
শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, সবচেয়ে ভাইব্রেন্ট রংগুলো যেমন লাল, কমলা, হলুদ এই রংগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেই। এবারের বৈশাখটা একটু অন্য রকম। একটা দীর্ঘ বন্ধের পরে আবার শুরু হয়েছে। এখন আবার আমাদের রমজান মাস চলছে। সব মিলিয়ে একটু চাপের মধ্যে আছি। কিন্তু আমাদের আশা আছে আমাদের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধারা অব্যাহত থাকবে। মানুষজন আসবে।
মেট্রোরেলের কাজ চলার কারণে এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে টিএসসি থেকে উপাচার্যের বাসভবনের মোড় পর্যন্ত। সেখান থেকে ঘুরে শেষ হবে চারুকলায়।