সরকারি নির্দেশনা অনুসারে শহরের মহাসড়কে ভারী যানবহনগুলো রাত ১২টার পর হতে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলাচলের নির্দেশনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। এ ছাড়া মহাসড়ক ব্যতিত শহরের সংযোগ রাস্তা গুলোর মধ্যে ভারী যানবহন চলাচল বা ঢোকা সর্ম্পনই নিষিদ্ধ বলে জানিয়েছে কেসিসি। তবে এ নিষেধ সম্পূর্ণ অমান্য করে অবাদেই নগরীর দৌলতপুর থানাধীন এলাকায় ওভারলোড বোঝাই ভারী যানবহনগুলো প্রবেশ করছে। যার ফলে কেসিসি’র বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মানকৃত রাস্তাসহ ড্রেনগুলো চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
দৌলতপুর এলাকায় বিশেষ করে দেয়ানা বাউন্ডারী রোডের ভাজা কারখানার মালামাল বহনকারী ট্রাক, দৌলতপুর খান রোডে চাল সরবরাহকারী ট্রাক, কল্পতরু বাউন্ডারী রোডে কাঠসহ অন্যান্য মালামাল বহনকারী ট্রাকসহ থানাধীন এলাকার বাসিন্দারের ভবণ নির্মানের জন্য ইট-বালু-সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক বা ভারী যানবহন গুলো সর্বদাই প্রবেশ করার দরুন এসকল এলাকার রাস্তাঘাট ও ড্রেন গুলো প্রায় অকেজো হতে বসেছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর একাধিক অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষের কোন সুনির্দিষ্ট তদারকী নেই বলে জানান এলাকাবাসী। ভারী যানবহন প্রবেশের কারণে এ সকল রাস্তাঘাট, ড্রেন ভাঙ্গাসহ খালখন্দে পরিনত হয়েছে। যার ভূক্তভোগী এলাকার সাধারণ মানুষ। রাস্তা ভাঙ্গা, রাস্তার সংর্কীনতা এবং রাস্তা ডেবে যাওয়ার দরুন খালখন্দে পড়ে প্রায় দূর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।
সরেজমিনে এমন চিত্রের দেখা মেলে দেয়ানা উত্তরপাড়া স্কুল মাঠের রাস্তাটির। ভারী যানবহন চলাচলের দরুন খালখন্দে পরিনত হয়েছে, যার প্রতিকার আজ পর্যন্ত সমাধানে করেনি কর্তৃপক্ষ। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের অর্ন্তভূক্ত দৌলতপুর থানাধীন ৩,৪,৫, ও ৬ নং ওয়ার্ডের মেইন সড়কসহ সংযোগ সড়কগুলো মুখে ভারী যানবহন প্রবেশ বন্ধে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ব্যারিকেট বারপোষ্ট স্থাপন করা হয়। সংযোগ সড়কের ভারী যানবহন প্রবেশ বন্ধের এই ব্যারিকেট বারপোষ্ট গুলো দীর্ঘদিন বেহাল দশায় পড়ে আছে। দীর্ঘদিন বেহাল দশায় দরুন দৌলতপুর থানাধীন এ সকল এলাকায় নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অবাদে সর্বক্ষন ভারী যানবহন প্রবেশ করছে। তাছাড়া সড়ক বিভাগের তদারকির অভাবে এ সকল যানবহন গুলো ধারন ক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত লোড দেওয়ার কারনে রাস্তাগুলোর ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। তবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন ২০১২ সালে প্রত্যেকটি ওয়ার্ড সমূহে রাস্তাঘাট সুরক্ষার জন্য ভারী যানবহন প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার জন্য বারপোষ্ট স্থাপন করে। এসকল ওয়ার্ড সমূহের কাউন্সিলরগনের প্রথমদিকে বারপোষ্টগুলো সংরক্ষনের জন্য অগ্রনী ভূমিকা প্রতিয়মান হলে বর্তমানে নেই কোন তদারকি। দৌলতপুর থানাধীন ওয়ার্ডগুলোতে কালের বিবর্তনে এ সকল বারপোস্টের প্রায় ৯০ ভাগই বিলুপ্তি হয়ে গেছে। এ সকল রাস্তা দিয়েই ১০ টনের ক্ষমতার পরিবহনে অধিক লোড দেয়া হয়। সম্প্রতি থানাধীন এ সকল এলাকায় সংযোগ সড়কগুলোর মুখে স্থাপিত বারপোস্টগুলো না থাকায় অবাদে প্রবেশ করছে ভারী যানবহন। ফলে এলাকার রাস্তাঘাট গুলো চরম ক্ষতির সম্মুখিকসহ শিশুদের চলাচলে চমর উৎকন্ঠাবোধ করছে অভিভাবকগন।
দেয়ানা হোসেন শাহ রোডের বাসিন্দা ও খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী টিপু বলেন, সম্প্রতি সময়ে এলাকার রাস্তা দিয়ে অবাদে যে ভারী যানবহন প্রবেশ করছে তা কেবল রাস্তা এবং ড্রেনের ক্ষতি করছে না বরং রাস্তা সংর্কীন হওয়ার দরুন প্রতিনিয়ত চলাচলে দুর্ভোগ লেগেই থাকে। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কোনরুপ ভূমিকা দেখিনা। এতে করে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অচিরেই এ সমস্যার দাবি জানিয়েছেন এই নগর নেতা।
মানিকতলার বাসিন্দা ট্রাক ড্রাইভার নান্নু বলেন, আমি জানি ভারী মালামাল নিয়ে ভেতরের রাস্তায় প্রবেশ করা মানা আছে। তবে মালিকেরা পাঠালে কি করব? তার ট্রাকে কেমন মালামাল লোড দেওয়া হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধারণ ক্ষমতার তুলনায় বেশি লোড দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, বর্তমানে ভারী যানবহন বিশেষ করে ইট-বালি গাড়িগুলো এলাকার মধ্যে অবাদে প্রবেশ করছে। ভারী যানবহন প্রবেশ রোধে সংযোগ সড়কে বারপোষ্ট দেওয়ার সমাধানকল্পে কেসিসিকে একাধিকবার বিষয়টি অবগত করা হলেও তারা কোন জোরদার ভূমিকা পালন করেননি।
এ ব্যাপারে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ লিয়াকত আলী খান জানান, মহাসড়ক ব্যতিত কোন ভারী যানবহন সড়কেরস
ংযোগ রাস্তা গুলোতে প্রবেশ করতে পারবেনা। ভারী যানবহন প্রবেশ রোধে নতুন সিধান্ত নেয়া হয়েছে নতুন কোন রাস্তা তৈরী হলে তার সাথে বারপোস্ট সংযোজন করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডের সংশিষ্ট কাউন্সিলরকে নির্দেশ দেওয়া আছে কোন অবস্থায় এলাকায় ভারী যানবহন প্রবেশ করবেনা এবং এই যানবহনের মাধ্যমে রাস্তাসহ কোন স্থাপনা ক্ষতি সাধন হলে ঐ গাড়ী আটক করে জরিমানা আদায় করতে । এ বিষয়ে কাউন্সিলগন এস্টেট অফিসারকে বিষয়টি অবগত করলে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান করবে।