করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুত ছড়ায়, তবে অতটা ভয়ংকর নয় বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে আয়োজিত ‘কোভিড ১৯, ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন, ডেলটা, অমিক্রন’- বিজ্ঞান, নৈতিকতা, বৈষম্য বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ কথা জানান।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন এরইমধ্যে বিশ্বের ৪৫টি দেশে শনাক্ত হলেও এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই জানিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধে তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ওমিক্রনে মিউটেশন অনেক বেশি। ফলে এর পরিবর্তনও ব্যাপক। আর এতে করে নতুন ধরনটি শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাও কমতে পারে। এজন্যই মনে করা হচ্ছে, ওমিক্রন হয়তো ডেল্টার চেয়েও ভয়ানক হবে।
বিজন কুমার বলেন, ওমিক্রনকে ভয়ংকর ভাবার কারণ এর মিউটেশন। এখন পর্যন্ত ডেল্টার সর্বোচ্চ ১৫টি মিউটেশন হয়েছে। ওমিক্রনের হয়েছে প্রায় ৫০টি। যার মধ্যে ৩২টি মিউটেশন হয়েছে স্পাইক প্রোটিন। যা দিয়ে সে মানুষকে খুব অল্প সময়ে সংক্রমিত করে। এছাড়া ১০টি মিউটেশন হয়েছে রিসেপ্টার ডোমেইন সাইডে। ভাইরাসের যে অংশটি প্রথম মানুষের দেহকোষের সঙ্গে সংযোগ ঘটায় তার নাম রিসেপ্টার বাইন্ডিং ডোমেইন।
এই সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ফিউরিন নামক একটি প্রোটিন পুরো ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। এটি সার্সকভ-১-এ ছিল না, তবে সার্সকভ-২-তে আছে। এখন এটি যদি আরও বিস্তার লাভ করে তাহলে ডেল্টার চেয়েও মারাত্মক হতে পারে। তবে এ মুহূর্তে ডেল্টার মতো আতংকিত করার অবস্থায় যায়নি ওমিক্রন। যদিও এটাই শেষ নয়, অবস্থা খারাপ হতে পারে। আফ্রিকা থেকে অন্যান্য দেশে শনাক্তের পর এটি আরও শক্তিশালী হয়েছে, সংক্রমণ যত বাড়বে ততই এটি মারাত্মক হতে থাকবে।
ড. বিজন বলেন, এরইমধ্যে যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তারা অনেকটা সুরক্ষিত। তবে এর বিপরীতে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কতটুকু সেটি সম্পর্কে এখনো পর্যালোচনা চলছে।