চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃনগরীতে ব্যাটারী চালিত রিকশা চলাচল বন্ধে পরিবহন সংকটে সাময়িক ভোগান্তি তৈরি হলেও বর্তমানে তা অনেকাংশে লাঘব হয়েছে। কারণ গত চার দিনের ব্যবধানে প্যাডেল রিকশার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হারে বেড়েছে। তবে এ সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও দুর্ব্যবহার করছে প্যাডেল রিকশা চালকরা এমন অভিযোগ যাত্রী সাধারণের।
জানা গেছে, নগরী জুড়ে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচল শুরু করে ব্যাটারী চালিত রিকশা। অবৈধভাবে চলাচলরত তিন চাকার এসব রিকশা কোন ট্রাফিক আইন মানছে না। এছাড়া ছোট আকৃতির তিন চাকার এ যান দ্রুতগতিতে চলার পর আর নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন না চালকরা। ফলে নগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি প্রায়শই ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় নগরবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠে, ব্যাটারী চালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচলের কারনে পরিবার নিয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। মাঝে মধ্যে যানজট তীব্র হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর থেকে ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধ করা হয়। এ সিদ্ধান্তে জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসলেও রিকশা মালিকদের বাধার মুখে চালকরা প্যাডেল রিকশা বের করতে পারেনি। ফলে জনসাধারণের সাময়িক ভোগান্তি তৈরি হয়। তবে গত চারদিনের ব্যবধানে প্যাডেল রিকশার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেড়েছে। গতকাল শনিবারও নগরীর অলিতে-গলিতে বেশ প্যাডেল রিকশা চলতে দেখা গেছে। ফলে মানুষের ভোগন্তি লাঘব হচ্ছে। তবে ব্যাটারী চালিত রিকশা বন্ধে পরিবহন সংকটের সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও দুর্ব্যবহার করছে প্যাডেল রিকশা চালকরা এমন অভিযোগ উঠেছে।
নগরীর বাসিন্দারা জানান, এখন সর্বত্র প্যাডেল রিকশা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী কম। তবে দিনে দিনে বাড়ছে। ফলে ভোগান্তি কমছে।
কর্মকর্তারা বলেন, খুলনার ঐতিহ্য ব্যাটারী বিহীন রিকশা নগরীতে চলবে। এতে দুর্ঘটনা ও যানজট কমবে।
এদিকে পরিবহন সংকটের সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও দুর্ব্যবহারে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে নগর সিপিবি। সংগঠনের সদস্য ওয়াহিদুর রেজা বিপলু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, যাত্রীদেরকে জিম্মি করে কিছুসংখ্যক অসাধু রিকশা চালক অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে দলটি।
গতকাল সিপিবির সদস্য ওয়াহিদুর রেজা বিপলু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নগরীর ৯৫ শতাংশেরও অধিকাংশ মানুষ যাতায়াতের ক্ষেত্রে গণপরিবহনের উপর নির্ভরশীল, এ বিপুল সংখ্যক যাত্রীরা একটিমাত্র রুটে হাতে গোনা কয়েকটি টাউন সার্ভিস বাস, মাহিন্দ্রা, ইজিবাইক ও রিকশার উপর নির্ভরশীল। যদিও একমাত্র রিকশা বাদে অন্য বাহনগুলো চলে মূল সড়কে। অথচ নগরী অবকাঠামোগতভাবে বিস্তীর্ণ এলাকায় অলি-গলি পথ। সেখানকার বাসিন্দাদের একমাত্র পরিবহন রিকশা। বিশেষ করে বয়ঃবৃদ্ধ, অসুস্থ, অফিস, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগামী মানুষ যাদের ব্যক্তিগত বাহন নেই, তারা শুধুমাত্র রিকশার উপর নির্ভরশীল। রিকশার অপ্রতুলতার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু যাত্রীদেরকে জিম্মি করে কিছুসংখ্যক অসাধু রিকশা চালক অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সিপিবি’র নগর সভাপতি এইচ এম শাহাদাৎ এবং সাধারণ সম্পাদক এড. মোঃ বাবুল হাওলাদার।
উল্লেখ, নগরীতে যাত্রী হয়রানি ও পরিবহন সংকটের কারণে দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ইজিবাকের লাইসেন্স প্রদানের দাবি করেছেন জনসাধারণ।