পিরোজপুর প্রতিনিধি :: পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে নিঁখোজের প্রায় ৪ মাস পর দরিদ্র এক ভ্যানচালকের কিশোরী মেয়েকে (১৬) উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা দায়েরের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত জিল্লুর রহমান ওরফে শান্তি জোমাদ্দার (৫২) উপজেলার চরনী পত্তাশী গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে এবং ২নং পত্তাশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। আজ বুধবার ভোররাতে শান্তিকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধারকৃত ওই কিশোরীর বাড়ির পাশে একটি মাছের ঘের রয়েছে শান্তির। সেই সূত্রে মাছের ঘেরে যাওয়ার পর প্রায়ই ওই কিশোরীকে না না ভাবে উত্যক্ত করত শান্তি । এ সময় ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া সহ বিভিন্ন ধরণের প্রলোভন দেখাত সে।
তবে বিষয়টি জানার পর শান্তির সাথে যোগাযোগ করলে সে ওই তরুণীর বাবাকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়। তবে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায়, বাধ্য হয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগেই ওই কিশোরীকে বিয়ে দিয়ে দেয় তার পরিবার। এতে মারাত্মক ক্ষিপ্ত হয় শান্তি। বিয়ের কিছুদিন পর বাবার বাড়িতে এসে আবার একা শ^শুর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সময় বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্য এক যুবকের সহায়তায় গত ১৬ এপ্রিল ওই কিশোরীকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ওই কিশোরীকে পার্শবর্তী বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যায় শান্তি এবং সেখানে তাকে বিয়ের নাটক করে এবং কিছুদিন সেখানে রেখে পরবর্তীতে তাকে এক নারীর সাথে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে কোন খোঁজ ছিল না ওই কিশোরীর। পরবর্তীতে ওই কিশোরীর বাবা গত ১৩ আগস্ট ইন্দুরকানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করে। এরপর পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই কিশোরীকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করে গতকাল ইন্দুরকানীতে নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, ভূক্তভোগীর বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের করার পর পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়েরের পর একমাত্র অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত শান্তিকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।