অনলাইন ডেস্কঃআগামী মাসের ৯ তারিখের মধ্যে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। আসন্ন শুনানিকে সামনে রেখে এরই মধ্যে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জাতিসংঘে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশে নির্যাতন নিয়ে আইন থাকলেও সরকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ বলে প্রতিবেদন দিয়েছে বেসরকারি সংস্থাগুলো।
এদিকে আইন হওয়ার পরও নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত নিয়ে কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি বাংলাদেশ সরকার। তবে এবারই প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদন জমা দেবে বলে আজই এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ওয়েবসাইটে তুলে ধরা প্রতিবেদনগুলো থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে নির্যাতনবিরোধী কমিটি ‘ইউএন কমিটি এগেনস্ট টর্চার’ আগামী ৯ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ, গ্রিস, পোল্যান্ড এবং টোগো সরকারের দেয়া প্রতিবেদন ও সুশীল সমাজের দেয়া প্রতিবেনদগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করবে।
এনজিও’র হয়ে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ, এইচআরআই ও ডাবলুসিএডিপি যৌথভাবে, ওএমসিটি ও অধিকার যৌথভাবে, ওআরডিআই ইন্টারন্যাশনাল রাইটস, রবার্ট কেনেডি হিউম্যান রাইটস এবং আরও কয়েকটি সংস্থা যৌথভাবে বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনগুলোতে প্রতিবন্ধীদের নির্যাতন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, কারাগারে অপ্রতুল স্থান, মানবাধিকার কর্মীদের নির্যাতন, সাংবাদিক নির্যাতন, বাকস্বাধীনতা খর্ব করা, মিছিল-মিটিং করতে না দেয়া, ছাত্র নেতাদের ওপর নির্যাতন নিয়ে বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।
রবার্ট কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সহিংসতা বেড়ে যায়। ক্ষমতাসীনরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বড় পদগুলোতে তাদের সমমনা লোক নিয়োগ করে। সেই সঙ্গে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি থেকে মুক্তিসহ অন্যান্য সুবিধা দেয়া হয়। এর জেরে সম্প্রতি নির্বাচনে সরকার ও আইন-শৃংক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনী নাগরিকদের ওপর বলপ্রয়োগ করে, বিচারবহির্ভূত হত্যায় জড়িত হয়, গুম, যৌন নির্যাতন এবং ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে।
‘নির্যাতন’ শব্দটি বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের প্রথম প্রকাশিত সংবিধানে যুক্ত করে। ২০১৩ সালে নির্যাতন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু শীর্ষক আইন তৈরি করে। এ আইনটি বাংলাদেশ জাতিসংঘের কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে তৈরি করে এবং নির্যাতনের বিস্তারিত আইনে বর্ণনা করা হয়। এরপর থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনটি নিয়ে সোচ্চার হয় এবং এর ব্যাখ্যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বাদ দেয়ার দাবি তোলে। এটি সংশোধন হলে কনভেনশনের ১ এবং ৪ ধারার লংঘন হবে।