চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ নোবেল পুরস্কার নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘নোবেল পুরস্কার র্যাব-পুলিশের হাতে নয় যে চাইলেই শেখ হাসিনাকে দেয়া সম্ভব।’
রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আ জ ম নাছিরের বক্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘পাগলরা এখন আওয়ামী লীগ করে নাকি আওয়ামী লীগ করলে মানুষ পাগল হয়ে যায়! পাগলে কি-না বলে ছাগলে কি-না খায়। মেয়র নাছিরের এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয়, তিনি আসলেই আওয়ামী লীগ। অন্যথায় তার বোঝা দরকার ছিল, নোবেল পুরস্কার র্যাব-পুলিশের হাতে নয় যে চাইলেই শেখ হাসিনাকে দেয়া সম্ভব। কিংবা অনুগত দলদাস সাংবাদিক দিয়ে প্রচারণা চালিয়েও নোবেল পাওয়া সম্ভব নয়।’
এসময় সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রমকে গ্রেফতারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির এ নেতা। তিনি বলেন, গতকাল চিকিৎসা শেষে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার সাথে সাথে সাজানো মিথ্যা মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রমকে গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। প্রথমে বিমানবন্দর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে পরে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করে।
তিনি বলেন, এ গ্রেফতার সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানুষের চোখকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার অপকৌশলমাত্র। সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী হিসেবে তিনি পানির ন্যায্য হিস্যা ও দেশের স্বার্থের পক্ষে একজন নির্ভীক ভাষ্যকার। পানি চুক্তির চক্রান্তের নানাদিক তুলে ধরতে পারতেন সাবেক এ পানিসম্পদ মন্ত্রী। এ কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার গ্রেফতার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। আমরা এ মুহূর্তে তার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
রিজভী আরো বলেন, প্রতিবেশী বন্ধুদের ফেনী নদীর পানি, চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর, বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যবেক্ষণে রাডার স্থাপনের অধিকার, আমদানিকৃত এলজিপি দিয়ে আসার এক সপ্তাহ না যেতেই সেই বন্ধুরাই আমাদের কয়েকজন র্যাব সদস্যকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে বেধড়ক পিটিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এত বড় অন্যায়ের খবর পত্রপত্রিকায় দেখে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। এতো বড় ঘটনার পরও সামান্য প্রতিবাদ পর্যন্ত করলো না এই নিশুতি সরকার।
এ সময় বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, গতকাল নিশিরাতের সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, ছাত্রদের ১০ দফা মেনে নেয়া হয়েছে আবার কিসের আন্দোলন?’ প্রথম কথা হচ্ছে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ দফা শেখ হাসিনা কিংবা তাদের নিয়োগকৃত উপাচার্য এমনিতেই মেনে নেয়নি, তাদের ১০ দফা দাবি মেনে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। আবরার ফাহাদের মতো আর কোনো অসীম সম্ভাবনাময় জীবন যাতে ঝরে না যায় সেজন্য বুয়েটের শিক্ষার্থীদের এই ১০ দফা।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে বন্যপ্রাণীর মতো পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। কী অপরাধ ছিল শহীদ আবরার ফাহাদের? সে তো বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছিল। লিখেছিল বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে।