নগরীর খালিশপুর নয়াবাটি স্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত মেলায় আসা দর্শনার্থীদের ওপর হামলা, শ্লীলতাহানী ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাবেক যুবলীগ নেতা কাজী ইয়াসির আরাফাত হোয়াইটসহ ২০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন। পুলিশ মেলা বন্ধ করে দিয়েছে।
শুক্রবার (০৬ মে) সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মারুফুর রহমান বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত কয়েক দিন ধরে নয়াবাটি হাজী শরিয়ত উল্লাহ হাই স্কুল প্রাঙ্গণে ঈদ মেলার আয়োজন করা হয়। অন্যান্য দর্শনার্থীদের মত আড়ংঘাটা থানার রায়েরমহল পূর্বপাড়ার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন শিকদারের ছেলে ঠিকাদার মারুফুর রহমানসহ তার পরিবারের লোকজন ওই মেলায় ঘুরতে যান। ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের সিরিয়াল ভেঙ্গে এক ব্যক্তি আগে যাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে মারুফুল নিজেকে যুবলীগ নেতা মার্শালের আত্মীয় পরিচয় দেন। এতে ওই যুবক ও তার সঙ্গীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তারা দু’জন আহত হন। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাদের দামী মোবাইল সেট ও স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা ভুক্তভোগীর স্ত্রী মীম ও শ্যালিকা সোমাইয়ার ওড়না ধরে টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানী ঘটনায়। খবর পেয়ে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে দুর্বৃত্তরা তাদের হুমকি দিয়ে স্কুলের বাউন্ডারী ওয়াল টপকে পালিয়ে যায়।
বাদী জানান, এ ঘটনার পর তিনি ও তার স্ত্রী খুমেক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। পরে এ ঘটনায় খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নং-৪, তাং-০৬,০৫,২২ইং। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোট সাতজনকে গ্রেফতার করেছে।
খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন খান জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন এসআই আঃ মান্নান। ঘটনার পরপরই মেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আঃ মান্নান জানান, এ ঘটনায় মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো-রাসেল হোসেন(২৪), রেজওয়ান শেখ(৩০), রাজ মল্লিক(২৫), রাকিব হোসেন(২২), শামীম হোসেন হৃদয়(২৬), লিটন শেখ(২৯) ও সালাউদ্দীন হাওলাদার (৩৫)। আসামীদের শনিবারই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
মহানগর যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী ইব্রাহীম মার্শাল বলেন, ওই স্কুল প্রাঙ্গণের মেলায় মহিলারা গেলে উল্লেখিতরা তাদের নানাভাবে হয়রানী করে থাকে। এছাড়া হোয়াইট নিজেকে ওয়ার্ড যুবলীগের আহবায়ক পরিচয় দিয়ে থাকেন। যা ঠিক নয়। কারণ ওয়ার্ড যুবলীগের কমিটি অনেক আগেই ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। তারপরও তিনি পরিচয় দিয়ে চলেছেন। বিষয়টি তিনি মহানগর যুবলীগের সভায় বলবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ কাজী ইয়াসির আরাফাত হোয়াইটসহ ৫ জনকে আসামী করে মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। নয়াবাটি মোড়ের বাসিন্দা ঝন্টু কাজী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। যদিও ওই মামলায় হোয়াইট জামিনে রয়েছেন।