চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃদেশে গত পাঁচ বছরে ১৩ হাজার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৩ হাজার ৭৬৭জন এবং আহত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৫২৫জন।‘জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মঙ্গলবার খুলনায় পালিত জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের সভায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের শহীদ সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা জেলা শাখা ও গ্রাস রুট অর্গানাইজেশন ফর টেকনোলজিক্যাল ইনিশিয়েটিভ (গতি) যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
সভায় নিসচা খুলনা জেলা শাখার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
আলোচনা সভায় সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে দেশে প্রায় ১৩ হাজার সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৩ হাজার ৭৬৭ জন নিহত এবং ৩৭ হাজার ৫২৫জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালে ২ হাজার ৭১৩টি ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪ হাজার ৫৩৬জন, আহত ১০ হাজার ৭৭০জন, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৬২৬টি ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫ হাজার ৩ জন, আহত ৬ হাজার ১৯৭জন, ২০১৬ সালে ২ হাজার ৩১৬টি ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪ হাজার ১৪৪ জন, আহত পাঁচ হাজার ২২৫জন, ২০১৭ সালে তিন হাজার ৩৪৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৪৫জন, আহত সাত হাজার ৯০৮ জন এবং ২০১৮ সালে নিহত হয়েছেন চার হাজার ৪৩৯ জন এবং আহত হয়েছেন সাত হাজার ৪২৫ জন।
সভায় খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এসএম হাবিব বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনার কারণে বছরে জিডিপির দেড় থেকে দুই শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে। এ কারণে প্রতি বছরে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা।
এ কারণে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আলাদা একটি বিভাগ তৈরির কথা বলেন তিনি।সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে নিসচা’র জেলা সভাপতি মো. হাছিবুর রহমান বলেন, ‘প্রতিটি দুর্ঘটনার পিছনে এক বা একাধিক কারণ থাকে। সাধারণত চালক ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মানে না, অতিদ্রুত বা বেপরোয়া গতিতে গাড়ী চালায়, প্রতিযোগিতা করে, বিপদজনকভাবে ওভারটেক করে, চালকের পরিবর্তে হেলপার দিয়ে গাড়ী চালায়, প্রয়োজনীয় বিশ্রাম না নিয়ে অবসাদগ্রস্থ অবস্থায় একটানা গাড়ী চালায়, গাড়ী চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলে, চালকের পর্যাপ্ত ট্রেনিং না থাকায় অনভিজ্ঞ, নেশাগ্রস্থ অবস্থায় গাড়ী চালায় এবং পথচারীদের অসতর্ক ও অমনোযোগী হয়ে সড়কে চলাচল করে। আর এসবই সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
আলোচনা সভায় বক্তারা সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর বিষয়ে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে শুধুমাত্র সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিলে হবে না। এজন্য প্রত্যেক নাগরিককেও দায়িত্ব পালন করতে হবে। একই সঙ্গে চালকদের প্রশিক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি চালকদের সামাজিক মর্যাদা প্রদান, রাস্তা পারাপারসহ গাড়ী চলাচলে ট্রফিক আইন মেনে চলা এবং রাস্তার পাশের ভূমি ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হওয়া। এছাড়া দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমাতে দক্ষ রেসকিউ টিম গঠন করা প্রয়োজন।সভায় বক্তব্য প্রদান করেন নিসচা’র সাধারণ সম্পাদক এসএম ইকবালসহ অন্যান্য ব্যক্তিরা।