ইমদাদুল হক:: এমন একটা সময় ছিল যখন জটিল কোন সমস্যা হলেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটে যেতে হতো খুলনা, সাতক্ষীরা কিংবা সুদূর ঢাকাতে। কয়েক বছর আগেই চিকিৎসার এমন চিত্র ছিল সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় খুলনার পাইকগাছা ও কয়রার। সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে অত্র এলাকার চিকিৎসা ব্যবস্থা। দেশের বড় বড় শহরের ন্যায় সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারী পর্যায়ে অত্র এলাকায় গড়ে উঠেছে উন্নত আধুনিক মানের চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান। যার মধ্যে অন্যতম ড্রিম ফোর হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। চিকিৎসার জন্য আর ঢাকা খুলনা নয়, এমন স্বপ্ন নিয়ে সহকারী অধ্যাপক মোঃ রকিবুজ্জামান, এম নূর উদ্দিন ও শেখ বেলাল উদ্দিন তিন বন্ধু মিলে উন্নত চিকিৎসা সেবা মানুষের দৌড় গোরায় পৌঁছে দিতে জেলার পাইকগাছা উপজেলা সদরের কয়রা পাইকগাছা সড়কের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন অমর নিউ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ৬ হাজার স্কয়ার ফুট জায়গার উপর গড়ে তুলেছেন আধুনিক মানের ড্রিম ফোর হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের প্রতিষ্ঠানটি।
১৩টি এসি দ্বারা পুরো ভবন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তবে বেডের ক্ষেত্রে এসি নন এসির ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক মানের অপারেশন থিয়েটার, ডিজিটাল ল্যাব, ৫০০ এম এ ডিজিটাল এক্সরে, ফোর ডি কালার আল্ট্রাসনোগ্রাম, ১২ চ্যানেল বিশিষ্ট ইসিজি, ফ্রান্সের অত্যাধুনিক মিনি ভিডাস হরমোন টেস্ট মেশিন সহ আধুনিক মানের সব যন্ত্রপাতি। সিজারিয়ান কেস, জ্বরায়ু, টিউমার, পাইলস, পিত্তথলির পাথর, হার্নিয়া সহ প্রায় সব ধরনের অপারেশন এখানে করা হয়। ডেলিভারির ক্ষেত্রে নরমাল স্বাভাবিক ডেলিভারি কে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এখানে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে সার্বক্ষণিক সেবা দিচ্ছেন এমবিবিএস ডাক্তার তানিয়া চৌধুরী। এছাড়া এখানে বর্তমানে ১২ জন চিকিৎসক নিয়মিত রোগী দেখেন। এরা হলেন অর্থোপেডিক্ ট্রমা স্পাইন সার্জন অত্র এলাকার কৃতি সন্তান সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার জি এম রুহুল কুদ্দুস, প্যারালাইসিস রিহ্যাব স্পেশালিষ্ট ডাক্তার জাফর সাদিক, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার খান আহমেদ হিলালী, মেডিসিন এ্যাজমা, যক্ষা ও বক্ষব্যাধী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার স ম মঈনুল হক, কলোরেক্টাল সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুর রব, নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাক্তার মোঃ সাইফুল ইসলাম, মেডিসিন স্পেশালিষ্ট ডাক্তার শেখ ফারহানা ফারুক, মেডিসিন ডায়াবেটিস, চর্ম যৌন মা ও শিশু বিষয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তার গোপাল বাছাড়, গাইনী ও প্রসূতি অভিজ্ঞ ডাক্তার মিন্নাতুল মোস্তফা এলিজা, চক্ষু ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন তুহিন, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোঃ ইশতিয়াক মাহমুদ এবং হৃদরোগ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোঃ রকিবুল হাসান।
অত্র হাসপাতালের ডাক্তার জিএম রুহুল কুদ্দুস এর নিকট চিকিৎসা নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানান গড়ইখালী ইউনিয়নের বাসখালী গ্রামের গৃহবধূ আম্বিয়া খাতুন, আম্বিয়ার ন্যায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন গোপালপুর গ্রামের যুবক রাসেল। হাসপাতালের উন্নত পরিবেশ যেকোন মানুষ কে মুগ্ধ করবে মন্তব্য করেন কয়রার আমাদী ইউনিয়নের বাসিন্দা সুমনা হক মুক্তা।
জন্মস্থানের মানুষের উন্নত সেবা দিতে পেরে নিজের ধন্য মনে করছেন বলে মন্তব্য করেন ডাক্তার জিএম রুহুল কুদ্দুস ও রুহিন হোসেন প্রিন্স। অত্র প্রতিষ্ঠানে নুন্যতম অর্ধ শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে পাশাপাশি গ্রামীন এ জনপদের মানুষ উন্নত পরিবেশে উন্নত সেবা নিতে পারছে এজন্য নিজের গর্বিত মনে করছেন বলে মন্তব্য করেন হাসপাতালের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মোঃ রকিবুজ্জামান। প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান বৃদ্ধি পাক এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।