পাইকগাছার কপিলমুনি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আমিনুরকে মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণের পর হত্যার ঘটনার ৩ দিন পর বুধবার সকালে ঘটনাস্থলের পাশে কপোতাক্ষ নদীর চর থেকে থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে। সকালে আগড়ঘাটা নদীর চরে তার গলিত লাশ আটকে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে সোমবার থেকে আটক তার ঘাতক ফয়সালের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কপোতাক্ষ নদীতে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েও তার লাশ উদ্ধার করা যায়নি। এরআগে ৯ নভেম্বর ছেলে হত্যার অভিযোগে আমিনুরের পিতা ছুরমান গাজী আটক ফয়সালকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। যার নং-০৭। এদিকে খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে মামলার একমাত্র আসামী ফয়সাল। এ ঘটনায় একমাত্র আসামী ফয়সালের ফাঁসির দাবিতে পরিবারের পাশাপাশি এলাকাবাসী মঙ্গলবার সকালে এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
প্রসঙ্গত, রবিবার (৭ নভেম্বর) উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের ছুরমান গাজীর ছেলে ও কপিলমুনি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অমিনুর রহমান (২০) কে পার্শ্ববর্তী গদাইপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে ফয়সাল (২২) মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে। এরপর আমিনুরের ব্যবহৃত ফোন দিয়ে ঐদিন রাত ১০ টার দিকে তার পিতা ছুরমান গাজীর কাছে দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মুক্তিপণের টাকা পাইকগাছা ব্রীজের নীচে রাখতে বলে অপহরণকারী। এরপর অপহৃত আমিনুরের পিতা ছুরমান গাজী তার কথামত দাবির কিছু টাকা নির্দিষ্ট স্থানে রাখেন। তবে ঘটনাস্থলে টাকা রেখে বিষয়টি নজরদারিতে থাকা পুলিশ ফয়সালকে সেখান থেকে টাকা নিয়ে ফেরার সময় আটক করেন।
কপিলমুনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাওসার আলী জোয়াদ্দার বলেন, আমিনুলকে যেখান থেকে মেরে নদীতে ফেলা হয় তার প্রায় ১ হাজার ফুট দূরে কপোতাক্ষ নদে ওর মরদেহ পাওয়া গেছে। পুলিশকে জানানোর পর আমিনুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, সকালে ঘটনাস্থলের প্রায় ৩ শ’ গজ দূরে নদীর চরে আটকে থাকা অবস্থায় নিহত আমিনুরের লাশ উদ্ধার হয়। এর আগে ফয়সালকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করে তাকে কোমল পানীয়র সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করে তার লাশ কপোতাক্ষ নদীতে ফেলে দেয় বলে জানায়। তারা স্বীকারোক্তি মোতাবেক সোমবার দুপুরের পর তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তের দাগ পাওয়ার পর লাশ উদ্ধারে কপোতাক্ষে ব্যাপক তল্লাশী শুরু করা হয়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আটক ফয়সাল আরো জানায়, তার কথিত প্রেমিকার মোটর বাইক কেনার আব্দার রক্ষা করতে সে আমিনুরকে অপহরণ করে তার পিতার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। তবে স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মুক্তিপণ পাওয়ার আগেই তাকে হত্যা করা হয়। তবে হত্যাকান্ডে ফয়সালের সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা এ সংক্রান্ত কোন তথ্য দেয়নি ফয়সাল।