সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা রবিবার , ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
পাটকল শ্রমিকদের বেতন-ভাতার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ | চ্যানেল খুলনা

খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ জুট মিলে ৩০ হাজার মেট্রিকটন পাটপণ্য অবিক্রিত

পাটকল শ্রমিকদের বেতন-ভাতার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ

চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন পাটকলগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ বিভাগের ‘অপ্রতাশিত ব্যয়’ খাত থেকে এই টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই টাকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু শর্তের কথা হয়েছে। ১. পাটকলগুলোর অন্য কোনও খাতে এই টাকা ব্যয় করা যাবে না। ২. এই টাকা সুনির্দিষ্ট ব্যাংকের এ্যাকাউন্ট-পে চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। ৩. টাকা খরচের সাত দিনের মধ্যে পাটকলভিত্তিক কর্মচারী ও শ্রমিকদের তালিকাসহ বিস্তারিত ব্যয়বিবরণী অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে। ৪. সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে এবং ৫. বিধিবহির্ভূতভাবে কোনও অর্থ পরিশোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আর্থিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, বিজেএমসি ও অর্থ বিভাগের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকের শর্ত যথাযথভাবে মানতে হবে। ছাড় করা অর্থ বিজেএমসির অনুকূলে ‘সরকারি ঋণ’ হিসেবে গণ্য হবে, যা আগামী ২০ বছরে (পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ) পাঁচ শতাংশ সুদে ষান্মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসির একটি চুক্তি সই হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এদিকে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে চরম আর্থিক সংকটে রয়েছে। এ কারণে নিয়মিত মজুরি ও বেতন পাচ্ছেন না শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তারা। এসব পাটকলের শ্রমিকদের ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২ থেকে ৪ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের প্রায় ৫৩ কোটি টাকা মজুরি ও বেতন বকেয়া রয়েছে। ফলে চরম অর্থকষ্টে রয়েছে শ্রমিক-কর্মচারীরা। এ অঞ্চলের প্রায় ৩১ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী পরিবারে চলছে হাহাকার। দূর্বিষহ দিন কাটছে তাদের।
এদিকে পাটকলগুলোতে ৩০ হাজার মেট্রিকটন পাটপণ্য অবিক্রিত রয়েছে। মূলতঃ উৎপাদিত পাটজাত পণ্য সময়মতো বিক্রি করতে না পারায় পাটকলগুলো আর্থিক সংকটের কারণে মজুরি-বেতন দিতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বকেয়া মজুরি, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে আজ বুধবার প্রতিকী অনশনে বসছে অর্থেকষ্টে দিশেহারা শ্রমিকেরা। এদিন স্ব-স্ব মিল গেটে সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
পাটকল শ্রমিক হালিম শেখ বলেন, তার ৩ ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করে। কিন্তু স্কুল-কলেজে যাওয়া-আসার টাকা এবং শিক্ষকদের বেতনের টাকা দিতে পারছেন না। সারাদিন কাজ শেষে বাড়ি ফিরলে সন্তানরা যখন টাকা চায়, স্ত্রী যখন বাজার করেছি কিনা জানতে চায়, তখন চুপ করে থাকতে হয়।
প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক মিজানুর রহমান ও আবদুর রশীদ বলেন, মজুরি না পেয়ে ধার দেনা করে পরিবার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। দোকান থেকে বাকিতে পণ্য কিনে চালাতে হচ্ছে। এখন তারাও বাকিতে পণ্য দিতে চায় না। এ অবস্থায় পরিবারের জন্য দু’মুঠো খাবার যোগানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, পাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলে স্থায়ী ও বদলি শ্রমিক রয়েছে মোট ২৯ হাজার ৬২৯ জন। তাদের ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। ১ হাজার ২৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বকেয়া রয়েছে ২ থেকে ৪ মাস। সব মিলিয়ে তাদের পাওনা রয়েছে প্রায় ৫৩ কোটি টাকা। এ অঞ্চলের ৯টি পাটকলে বর্তমানে ৩০ হাজার ৪৬২ মেট্রিক টন পাটজাত পণ্য বিক্রির অপেক্ষায় পড়ে রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ২৮০ কোটি টাকা। উৎপাদিত পণ্য সময়মতো বিক্রি করতে না পারায় মিলগুলো আর্থিক সংকটে পড়েছে।
এদিকে আর্থিক সংকটের কারণে মিলগুলো প্রয়োজনীয় কাঁচা পাট কিনতে পারছে না। চলতি অর্থ বছরে মিলগুলোতে কাঁচা পাট কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৮ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৩ কুইন্টাল। কিন্তু ৫ মাস কেনা হয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ২৬৭ কুইন্টাল। যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২৪ শতাংশ। এ অবস্থায় মিলগুলোতে উৎপাদনে ধস নেমেছে। প্রতিদিন ২৭২ মেট্রিক টন পাটজাত পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৭৭ মেট্রিক টন।
দেশে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের বহুমুখী পণ্যের চাহিদা থাকলেও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে তা উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এ অঞ্চলের পাটকলগুলো শুধুমাত্র পাটের বস্তা, চট, কার্পেট ও সূতা উৎপাদন করছে।
ক্রিসেন্ট জুট মিলস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন আজাদী বলেন, শ্রমিকদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এ অবস্থায় তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন। শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ নেই। সেই সাথে নিয়মিত মজুরি পরিশোধও করা হচ্ছে না। সময়মতো কেনা হচ্ছে না প্রয়োজনীয় কাঁচা পাট। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় বৈঠক করে গত ১৭ নভেম্বর সাত দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সেই অনুযায়ী আজ বুধবার প্রতিকী অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে।
প্লাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মোঃ গোলাম রব্বানী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। ইরাক, সুদান ও ভারত আগের মতো পণ্য নিচ্ছে না। সে কারণে মিলগুলো আর্থিক সংকটের পড়েছে। তবে বিজেএমসি আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের জন্য কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, মিলগুলোকে লাভজনক করতে হলে পাট মৌসুমে পাট কেনা, মিলের যন্ত্রপাতি বিএমআরই করা, বহুমুখী পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনে নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সমন্বয়কারী বনিজ উদ্দিন মিয়া বলেন, খুলনা অঞ্চলের পাটকলগুলোর বিদ্যমান সমস্যার কথা বিজেএমসির প্রধান কার্যালয়কে অবহিত করা হয়েছে।

https://channelkhulna.tv/

সংবাদ প্রতিদিন আরও সংবাদ

সাবেক আইজিপি ও কেএমপি কমিশনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্রের ওপর ডিম নিক্ষেপ

আমির হোসেন আমু গ্রেপ্তার

কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের ঢুকতে দেওয়া হবে না তাবলিগ জামাত

কালীগঞ্জে ভারতীয় গরু আনতে গিয়ে যুবক আটক

পাটের ব্যাগ পুনরায় সর্বত্র চালুর উদ্যোগ নিয়েছি : সাখাওয়াত

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।