দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব তহবিল গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে এ তহবিল গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’-এর স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা বৃহস্পতিবার গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
মুন জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে প্রকল্প বাস্তবায়নে তারা নিজস্ব ফান্ড তৈরি করতে পারে।
শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্যদের সরকার প্রধান বলেন, ‘পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকে দেশের উন্নয়নে কাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী। একটু সুযোগ করে দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ করে বিদেশ থেকেও তারা উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে আসতে পারে।’
ছাত্র-ছাত্রীদেরকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদেরকে আরও দায়িত্বশীল ও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সোনার ছেলে গড়ে তুলতে হবে বলে এ সময় মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকে সে লক্ষ্যে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা ও সৃজনশীল কাজের মধ্যে তাদেরকে যুক্ত রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পুনরায় চালুর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর অস্ত্রের সেই ঝনঝনানি নেই। দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কঠোর হাতে দমন করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার শিক্ষার উন্নয়ন, গবেষণা, উৎপাদন ও উৎকর্ষতার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখন দেশে শিক্ষার হার ও মান বৃদ্ধি পায়।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে।
উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপাচার্যরা তাদের নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরলে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ক্রমে তা সমাধানের আশ্বাস দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৪৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।