আন্তর্জাতিক ডেস্কঃমধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে কাসেম সোলাইমানি হত্যার পর থেকে এই আলোচনা নতুন মোড় নেয়। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম লাস ভেগাস সানের একটি নিবন্ধে বলা হয়, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র ও আধুনিক সরঞ্জামাদি তৈরির জন্য উত্তর কোরিয়ার সাহায্য নিয়েছে ইরান। তেহরানের অনেক ক্ষেপণাস্ত্র পিয়ংইয়ংয়ের প্রযুক্তিতে তৈরি।
ওই নিবন্ধে আরও বলা হয়, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণে উত্তর কোরিয়া যেসব প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে সেগুলো ইরানের সঙ্গে ভাগাভাগি করে। ফলে এমন কোনো অস্ত্র বা সরঞ্জাম নেই যেগুলো উত্তর কোরিয়ার আছে অথচ ইরানের থাকবে না। এ কারণে ধারণা করা হয়, পিয়ংইয়ংয়ের যেহেতু পারমাণবিক বোমা আছে, ইরানের হাতেও সেটি থাকতে পারে। শুধু পারমাণবিক বোমা নয়, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অন্য সব অস্ত্রও দুটি দেশ একই সঙ্গে উৎপাদন করছে বলেও ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
ইরানের কাছে এরই মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। এ জন্য ২০১৪ সালের পরিসংখ্যানের দিকেও নজর দেন কেউ কেউ। তখন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার জানায়, ইরানের পরমাণু কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি (আইএসআইএস)।
ওই সময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএসআইএস জানায়, ২-৩ মাসের মধ্যে পারমাণবিক বোমার মালিক হবে ইরান। এরই মধ্যে তারা ২৫ কেজি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা একটি বোমার জন্য যথেষ্ট। অবশ্য ইরান দাবি করছে, তাদের পারমাণবিক বোমা নেই। এমনকি পারমাণবিক বোমা তৈরির কোনো ইচ্ছাও তাদের নেই। কিন্তু আমরা ইরানের এসব দাবি মানতে পারছি না।
আইএসআইএস ২০১৪ সালের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছিল। এরপর ২০১৫ সালে ছয়জাতির সঙ্গে চুক্তি হয় ইরানের। তখন থেকে পরমাণু কার্যক্রমের গতি হ্রাস করে ইরান। অথচ হিসাব অনুযায়ী, তার আগেই ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা।
বর্তমানে পশ্চিমা অনেক গবেষক বলছেন, আগামী ১ বছরের মধ্যে পারমাণবিক বোমার মালিক হবে ইরান। কেউ কেউ বলছে ৬ মাসের মধ্যে হবে। অর্থাৎ, ইরানের পরমাণু কার্যক্রম সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য কারও কাছেই নেই। এমনকি কেউ এসব তথ্য যাচাইও করতে পারেনি।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে ইরান যেভাবে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে তাতে অনেকেই বেশ বিস্মিত হয়েছেন। এ কারণে মনে করা হচ্ছে, ইরানের কাছে পারমাণবিক বোমা থাকার ফলেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে তেহরান। অন্যথায় পারমাণবিক শক্তির অধিকারী যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে হামলা চালানোর মতো সাহস দেখাত না তারা।