সোমবার (৫ আগস্ট) বেলা আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা উড্ডয়ন করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তাঁরা হেলিকপ্টারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি সে সুযোগ পাননি।
গণভবনে ঢুকে পরেছেন হাজারো মানুষ
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে ঢুকে পরেছেন হাজারো মানুষ।আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার পর থেকেই তারা গণভবনে ঢুকতে শুরু করেন। গণবিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বোনকে নিয়ে ঢাকা ছেড়েছেন।
যা বলছে আনন্দবাজার
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইস্তফা দিয়েছেন। বোন রেহানাকে নিয়ে তিনি ‘গণভবন’ ছেড়েছেন বলে খবর। তাঁকে কপ্টারে করে ‘নিরাপদ’ আশ্রয়ের উদ্দেশে পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশে সেনার অধীনে তদারকি সরকার গঠিত হতে পারে। সূত্রের খবর, তার আগে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর তরফে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে সময় বেঁধে দেওয়া হয় ইস্তফা দেওয়ার জন্য। ৪৫ মিনিট সময় তাঁকে দেওয়া হয়েছিল বলে খবর। তার পরেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। বাংলাদেশ গণমাধ্যম সূত্রে খবর, দেশ ছাড়ার আগে হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন। তাঁকে সেই সুযোগও দেয়নি বাংলাদেশ সেনা। কিছু ক্ষণ পরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
কপ্টারে দেশ ছেড়েছেন হাসিনা। একটি সূত্রের দাবি, হাসিনা নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে উদ্ধারের জন্য ভারত থেকে বাংলাদেশে বিমান পাঠানো হবে না বলে জানিয়ে দেয় নয়াদিল্লি। ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের আকাশসীমায় ভারত কোনও বিমান পাঠাবে না। কারণ তাতে আইন লঙ্ঘিত হতে পারে। ভারত থেকে জানানো হয়, হাসিনাকে ভারতে পৌঁছতে হবে। তার পর সেখান থেকে তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। কপ্টারে ঢাকা থেকে দিল্লি পর্যন্ত যাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে তাঁর নিকটবর্তী অবতরণ স্থান হতে পারে কলকাতা বিমানবন্দর। সেখান থেকে তাঁকে বিশেষ বিমানে করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। অন্যান্য সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ত্রিপুরার আগরতলা বিমানবন্দরে এবং শিলিগুড়ির কাছে বাগডোগরা বিমানবন্দরেও নামতে পারেন হাসিনা।
গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে সরকার বিরোধী আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি ছিল— হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। রবিবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি ক্রমে জটিল হচ্ছিল। সোমবার হাসিনা পদত্যাগ করলেন।
রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে অশান্তি ঠেকাতে কার্ফু জারি করা হয়েছিল। সোমবার থেকে তিন দিন ছুটিও ঘোষণা করে সরকার। তবে সোমবার সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় কার্ফু উপেক্ষা করে ভিড় বাড়তে থাকে মানুষের। আন্দোলনকারীদের জমায়েতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয়। কিন্তু আন্দোলন দমানো যায়নি। পরে শোনা যায়, জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেনাপ্রধান। তার পরেই হাসিনার পদত্যাগের খবর প্রকাশ্যে আসে। বাংলাদেশ গণমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের মাঝেই বাংলাদেশের রাস্তায় নেমে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। লাখ লাখ মানুষ হাসিনার বাসভবন ‘গণভবন’-এ ঢুকে পড়েছেন।