আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তবে বিএনপি এবার সিটি ভোটে না থাকায় নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে নেই কোনো উৎসব-উত্তেজনা। তবে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা থেমে নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা ফেসবুকসহ কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত অব্দি মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন। বেশি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলরপ্রার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে এসব কর্মকা-ে যোগ দিয়েছে ভাড়াটে কর্মীরাও। প্রার্থীরা পাড়া-মহল্লায় পথসভা, উঠান বৈঠকের পাশাপাশি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মন জয় করার চেষ্টা করছেন। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। তবে বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের রয়েছে একাধিকপ্রার্থী।
খুলনার রূপসা নদীর উত্তর ও পূর্বে খুলনা সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে নতুনবাজার লঞ্চঘাট, কাস্টমস ঘাট, রূপসা ঘাট, খুলনা জিলা স্কুল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশ সুপারের বাসভবন, খুলনা টাউন জামে মসজিদ, সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কার্যালয়, খুলনা ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব, আযমখান সরকারি কমার্স কলেজ, সরকারি মডেল স্কুল, খুলনা পঙ্গু হাসপাতাল, খুলনা পুলিশ লাইনস, খুলনা পরিসংখ্যান অফিসসহ রয়েছে বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এ ওয়ার্ডটির জনসংখ্যা ২৫ হাজারের মতো। ভোটার রয়েছেন প্রায় ১৭ হাজার। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কাজী আবুল কালাম আজাদ (বিকু)। তিনি খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সদস্য। গতবারই প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী হিসেবে তাদের পরিবারের সুনাম রয়েছে।
বিকুর পাশাপাশি এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন সদর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা অহিদুল ইসলাম পলাশ। তবে স্থানীয়রা জানান, এই দুই জনের কেউই তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নন।
বিকু বলেন, ওয়ার্ডের প্রায় সব জায়গায় ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন আর বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা হয়না। মশার উপদ্রব এবং বংশবিস্তার রোধে সপ্তাহে অন্তত দুইবার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। একসময় এ ওয়ার্ডে মাদকের ব্যাপক বিস্তার হয়েছিল, এখন সেটা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে।
বিকু আরও বলেন, আমরা সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করছি। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপগুলো কাজ করছে না। এ কারণে গত দুইবছর শুষ্ক মৌসুমে মানুষের কিছুটা কষ্ট বেড়েছে। তবে পুনরায় নির্বাচিত হলে পানির সমস্যা নিরসন, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, গত সাড়ে ৪ বছরে খুলনা সিটি করপোরেশনে যে উন্নয়ন হয়েছে; ৩৩ বছরেও তা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী খুলনার জন্য আড়াই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। করোনার কারণে দুইবছর কাজ বন্ধ ছিল। জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় অনেক কাজে ঠিকাদার পাওয়া যায়নি। এসব সমস্যা নিয়েই ৩১ ওয়ার্ডেই উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। আগামীতে নির্বাচিত হলে সব ওয়ার্ডের কাজ শেষ করব।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৪৫ বর্গকিলোমিটারের নগরে ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। ১৬ লাখের উপরে বসতি থাকলেও বর্তমানে ভোটার সংখ্যা পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ৬৪০ জন।