হাইকোর্ট বলেছেন, নাগরিকদের পাসপোর্টসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন হয়। আর এই ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন পেতে নাগরিকদের হরহামেশাই আর্থিক ও মানসিক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঘুষ দাবির মামলায় স্পেশাল ব্রাঞ্চের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাদেকুল ইসলামের দুই বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
ওই এএসআই পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য হাইকোর্টের এক বিচারপতির বাসায় গিয়ে তাঁর স্ত্রীর কাছে ঘুষ দাবি করেছিলেন। পরে ওই ঘটনায় করা মামলায় দুই বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে আপিল করলে হাইকোর্ট সাজা বহাল রেখে গত বছরের ২২ আগস্ট রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি গত মাসে প্রকাশ করা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, সাদেকুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের দুই মেয়ের পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য তাঁর ধানমন্ডির বাসায় যান। সেখানে তিনি নিজেকে পুলিশের এসআই সালাম হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বিচারপতির স্ত্রীর কাছে ভেরিফিকেশনের জন্য দুই হাজার টাকা দাবি করেন এবং বলেন, পুরো টাকা না দিলে ভেরিফিকেশন হবে না।
ওই ঘটনায় হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দিলে সুপ্রিম কোর্টের তখনকার সময়ের স্পেশাল অফিসার বেগম হোসনে আরা আকতার শাহবাগ থানায় সাদেকুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দুদক তদন্ত করে ২০১৭ সালে অভিযোগপত্র দেয়। বিচারিক আদালত ২০১৯ সালের ২১ মার্চ রায় দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন সাদেকুল ইসলাম।
হাইকোর্ট রায়ে বলেন, বিচারিক আদালতের রায় সঠিক এবং ন্যায়ানুগ হয়েছে। আপিলটি নামঞ্জুর করা হলো। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আসামিকে সাদেকুল বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় আদালত আসামিকে গ্রেপ্তারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। সাদেকুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. তয়েদ উদ্দিন খান। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এস এম কামাল আমরোহী চৌধুরী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক চৌধুরী।