সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরায় সুপার সাইক্লোন প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে ক্ষতিগস্থ ভেড়িবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে অনন্ত ২১ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ের ৩ দিন অতিবাহিত হলেও ভাঙ্গন কবলিত স্থান বাঁধ দিতে পারেনি পাউবো কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রবল জোয়ারের পানিতে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। উপকুলীয় শ্যামনগর উপজেলার প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফলে প্রবল জোয়ারের পানিতে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। বাড়ির উঠোনেই হচ্ছে জোয়ার-ভাটা। একই অবস্থা আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আনুলিয়া ও সদর ইউনিয়নে। পানিবন্দি হয়ে পড়া অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের মাঝে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পানি বাহিত রোগের প্রর্দুভাব দেখা দিয়েছে । সেখানে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শত শত মানুষ। তাছাড়া স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে। উপরে আকাশ আর নিচে পানি। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার(২৩ মে) সকাল ১০ টায় শ্যামনগর উপজেলায় গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী ও কাশিমাড়ী ইউনিয়নে ক্ষতিগস্থ ভেড়িবাঁধ এলাকা পরিদর্শনে যান পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার, জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, পাউবোর চিফ ইঞ্জিনিয়ার এসএম রফিকুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল গাবুরার লেবুবুনিয়া ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ।
এসময় তার সাথে ছিলেন, পাউবো খুলনা জোনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আবুল হোসেন, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের,সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ নিবার্হী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খান,উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ নাহিদুল ইসলাম,মোঃ রাশিদুর রহমান, শ্যামনগরের শাখা কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ওবায়দুল হক মল্লিকসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পাউবোসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে, গাবুরা ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া গ্রামে পাউবোর বেড়িবাঁধের ৩৩৫ মিটার খোলপেটুয়া ও কপোতক্ষ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তীব্র শ্রোতের বেগে ও জোয়ারের পানি প্রবেশ করে গাবুরার ৬টি গ্রাম, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে ৭টি গ্রাম ও কাশিমাড়ী ইউনিয়নে ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে এ উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। আর পানিতে ভেসে গেছে ছয় হাজারের মত চিংড়ি ঘের। প্লাবিত এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট। ইতিমধ্যে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।।
ভাঙ্গন কবলিত স্থান পরিদর্শন শেষে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উপকুলী জনপদের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিন বছর মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে । শিগ্রই উপকূলীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে ক্ষতিগস্থ পাউবোর বেড়িবাঁধ টেকসই মজবুত ও সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।