সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার প্রধান সড়কটির ব্যস্ততম অংশের ইটের সলিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টির হয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছে যাতায়াতকারি হাজার হাজার মানুষ। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কার্যাদেশ দেওয়ার প্রায় পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও কাজ শুরু করেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, প্রায় সাত বছর আগে বাগেরহাট-খুলনা পুরাতন সড়কে ফকিরহাট বাজারের উপরের এই অংশের সমস্ত রাস্তার পিচের কার্পেটিং খুঁড়ে ওয়াসা বৃহদাকার পাইপ বসায়। এরপর কর্তৃপক্ষ রাস্তাটিতে শুধুমাত্র ইটের সলিং দিয়ে ঢেকে দেয়। ২০১৮ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ওয়াসা এই বৃহদাকার পাইপ বসায়।
ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল, ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস, থানা, সরকারি কার্যালয় ও বিভিন্ন স্কুল কলেজে যাওয়ার জন্য এ রাস্তাটি মানুষ ব্যবহার করে। উপজেলা সদর বাজারের উপর রাস্তাটি অবস্থিত হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতা বিক্রেতা যাতায়াত করে এ রাস্তা দিয়ে। এছাড়া এই রাস্তা দিয়েই ফকিরহাটসহ আশে পাশের কয়েকটি উপজেলার মানুষ বিভাগীয় শহর খুলনায় যাতায়াত করেন। ফলে অসংখ্য যানবাহন ও মানুষের দুর্ভোগের অপর নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ফকিরহাটের এ প্রধান সড়কটি। সামনে ও পিছনে পিচ ও কংক্রিটের রাস্তা থাকলেও মাঝখানের প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তায় খানাখন্দের কারণে মানুষের কষ্টের যেন শেষ নেই!
রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ভ্যান যোগে এ রাস্তা দিয়ে ফকিরহাট উপজেলা হাসপাতালে এক গর্ভবতী মাকে নিয়ে যাওয়ার সময় ভাঙ্গা রাস্তায় অনাবরত ধাক্কা খেয়ে তিনি আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এ রাস্তা দিয়ে যানবাহনে যাওয়ার সময় ঝাঁকি লেগে অনেক যাত্রীর ব্যাগসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রাস্তায় পড়ে যায়। অনেকের জমির দলিল, একাধিক ছাত্রছাত্রীর সার্টিফিকেট হারিয়ে হর হামেশা নানান দুর্ভোগে পড়ছে মানুষ। এছাড়া প্রায়ই ঘটে ছোট বড় দুর্ঘটনা। একাধিক চালক ও পথচারীদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
রাস্তাটি মাঝে মধ্যে সংস্কার করলেও সড়কের পাশে ড্রেন না থাকায় দ্রæত নষ্ট হয়ে যায়। ভারী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, শত শত ইজিবাইক, মাহিন্দ্র, পিকআপ, নসিমন এবং খুলনা ও বাগেরহাটগামী যানবাহন এই সড়ক দিয়ে যাওয়া-আসা করে। যানবাহনের চাপের কারণে ইটের সলিং উঠে গিয়ে দুর্ঘটনা প্রবণ হয়ে উঠেছে সড়কটি। স্থানীয় দোকানদার বলরাম মিত্রসহ অনেক ব্যবসায়ী এ তথ্য জানান।
রাস্তাটির কাজ পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাহফুজ খান লিমিটেড এর স্বত্ত্বধীকারী মো. মাহফুজ খান মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, নির্বাচনের জন্য কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন দ্রæতই কাজ শুরু করা হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করা হবে।
ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, সরকার ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই রাস্তাটিসহ আরো কিছু অংশ নির্মানের জন্য কার্যাদেশ ও ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এখনও কাজ শুরু করেনি। এতে জনদূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছ। রাস্তার কাজটি দ্রুত শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে বাগেরহাট সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ফকিরহাটের বাজারের এ রাস্তা নির্মাণের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলেছি। দ্রুত কাজ শুরু হবে আশা করছি।