আসাদুজ্জামান আসাদ: দেবী দুর্গা আসছে। দুয়ারে কড়া নাড়ছে শারদীয় দূর্গোৎসব। শুক্রবার ২০ অক্টোবর মহাষষ্টীর মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। আর দুর্গাপূজাকে ঘিরে তাই সবখানে সাজ সাজ রব। বৃহৎ এই উৎসবকে সামনে রেখে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায় এবার ৭০ টি পুজা মন্ডপে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
বৃষ্টি বৈরিতার মাঝে এক মাস আগে থেকে শুরু হওয়া দেবী দূর্গার প্রতিমা তৈরির কাজ শেষে অনেকখানেই চলছে রং তুলির কাজ। শেষ সময়ের ব্যস্ততা তাই সবখানেই। রাতদিন একাকারে কাজ করে লাল, নীল, গোলাপী, হলুদসহ বিভিন্ন রং দিয়ে দেবী দূর্গা এবং অন্যান্য প্রতিমার রুপকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে মন্ডপে মন্ডপে।
ফকিরহাট কেন্দ্রীয় মন্দির, গন্ধেশ্বরী মন্দির, শীতলাতলা মন্দির, নলধা বারুইডাংগা সার্বজনীন পূজা মন্দিরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে শেষ মুহুর্তের ব্যস্ততায় রয়েছেন কারিগররা। এর মধ্যে বারুইডাংগা সার্বজনীন পূজা মন্দিরে চলছে রংতুলির শেষ আঁচড়ের সাথে সাজসজ্জার কাজ। উপজেলার বিভিন্ন পুজামন্ডপে চলছে একই রকমের ব্যস্ততা। পুজামন্ডপের ব্যস্ততার পাশাপাশি প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ততা রয়েছে প্রতিমা তৈরির কারিগরদের বাড়ীতেও। ফকিরহাট বাজারের পালপাড়ার অরুন পালের বাড়ীতে দেখা গেছে সেই ব্যস্ততা বহুগুণ। অর্ডারী কাজ সাপ্লাই দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। দিনরাত পরিবারের সকলকে সাথে নিয়ে প্রতিমা তৈরি ও তাতে রংতুলির কাজ সেরে নিচ্ছেন। ‘বাঁশ খুটি কুটো মাটি কিনে যে প্রতিমায় ২৫ হাজার টাকা পাই তাতে খরচ চলে যায় ১৫ হাজার টাকা। খেটেপিটে এখন আর তেমন লাভ থাকেনা। বৃষ্টি বাদলের কারণে অনেক ঝামেলা গেছে এবার। প্রতিমা শুঁকানোয় সময় লাগছে বলে রংতুলির কাজ শুরু হয়নি অনেক মন্ডপে। তবে যে কয়টা দিন সামনে আছে তাতে কোন সমস্যা হবেনা বলেও জানালেন অরুন পাল’।
ফকিরহাটে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত ১০ অক্টোবর আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা বেগম নেলী। ফকিরহাট পুজা উদযাপন পরিষদ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সহ গণমাধ্যমকর্মী ও বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন সেই সভায়।
এবছর ফকিরহাট উপজেলায় সর্বাধিক মুলঘর ইউনিয়নে ২২টি সহ ফকিরহাট সদর ইউনিয়নে ১০টি, নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নে ১০টি, লখপুর ইউনিয়নে ৯টি, বাহিরদিয়া মানসা ইউনিয়নে ৭টি, পিলজংগ ইউনিয়নে ৬টি, শুভদিয়া ইউনিয়নে ৪টি ও বেতাগা ইউনিয়নে ৩টি (ব্যক্তিগত আয়োজনে ১টি) মন্ডপে চলছে দুর্গাপূজার আয়োজন।