সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ফেনী নদীর পানিচুক্তিতে হুমকির মুখে পড়বে মুহুরী সেচ প্রকল্প | চ্যানেল খুলনা

ফেনী নদীর পানিচুক্তিতে হুমকির মুখে পড়বে মুহুরী সেচ প্রকল্প

চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ ভারতের সাথে ফেনী নদীর পানিচুক্তিতে হুমকির মুখে পড়বে মুহুরী সেচ প্রকল্প। ধ্বংস হয়ে যাবে ৩৫ হাজার একর মৎস্য প্রকল্প। সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ অঞ্চলের প্রায় অর্ধকোটিরও বেশি মানুষ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে শনিবার দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত। এই পানি তারা ত্রিপুরা সাব্রুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে।

ফেনী নদী, অভিন্ন নয়- শুধুই বাংলাদেশের সম্পদ। এর উৎপত্তি, প্রবাহ এবং ভৌগোলিক অবস্থান নিশ্চিত করে ফেনী নদী কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক নদী প্রবাহের সীমারেখায় প্রবাহিত নয়। দেশি-বিদেশি যারাই ফেনী নদীকে অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদী প্রমাণের চেষ্টা করছেন বহু বছর ধরে, তারা কখনোই মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করে এর পক্ষে যুক্তি দেখাতে পারেননি। সেখানেও তারা কোনো ভাবেই দু’দেশের অমীমাংসিত ভূমি নিয়ে কথা বলেন না।

খাগড়াছড়ির ১৭ শ’ একর অমীমাংসিত বাংলাদেশের যে ভূমির উপর দিয়ে এ নদী প্রবাহিত, তা ভারতের বলেই চালিয়ে দিতে চেষ্টা করেন অনেকে। শুধু তাই নয়, ভারতও নিজেদের উত্তর-পূর্বাংশের বেশক’টি রাজ্যের পানির অভাব মেটাতে দীর্ঘ বছর ধরে নানা কৌশলে ফেনী নদীকে আন্তর্জাতিক নদী প্রমাণের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারে ক্ষয়ক্ষতি
ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহার করে নেয়া হলে শুষ্ক মৌসুমে নদী তীরবর্তী চট্টগ্রামের মিরসরাই, খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা, ফেনীর ছাগলনাইয়া, পরশুরাম, সোনাগাজী, মুহুরী সেচ প্রকল্প, ফুলগাজী, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের দক্ষিণাংশ এবং নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুরের কিছু অংশের বিভিন্ন সেচ প্রকল্পে পানির জোগান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এতে করে লাখ লাখ হেক্টর চাষাবাদের জমি অনাবাদি হয়ে পড়বে। অকার্যকর হয়ে পড়বে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প ‘মুহুরী’। যার আওতায় এ অঞ্চলের প্রয় ১৪ থেকে ১৫টি উপজেলার ৮-৯ লাখ হেক্টর জমিতে লোনামুক্ত পানির সরবরাহ করা হয়। এ প্রকল্পের আওতায় যেখানে ফেনী, মুহুরী ও কালিদাস পাহালিয়া- এ তিনটি নদীর পানি দিয়ে ৮-৯ লাখ হেক্টর জমির সেচকাজ করার কথা, সেখানে এখনই শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে ২৩ হাজার হেক্টর জমিতেও সেচ দেয়া সম্ভব হয় না।

মুহুরী সেচ প্রকল্পের প্রায় ৮০ ভাগ পানির মূল উৎস ‘ফেনী নদী’। ফেনী থেকে ২৫ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম থেকে ৭০ কিলোমিটার এবং সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম-ফেনী জেলার সীমানায় মুহুরী সেচ প্রকল্পটির অবস্থান। এখানে গড়ে ওঠা দিগন্তবিস্তৃত চিংড়ি ঘেরগুলো ধ্বংস হবে।

এছাড়া মুহুরী প্রকল্পের নয়নাভিরাম পর্যটন সম্ভাবনা হারিয়ে যাবে নিমিষেই। হুমকির মুখে পড়বে কয়েক লাখ হেক্টর জমির গাছপালা। ফেনী নদী, মুহুরী ও কালিদাশ পাহাড়িয়া নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মৎস্য খামার বন্ধ হয়ে যাবে। যা থেকে উৎপাদিত মাছ দিয়ে পুরো চট্টগ্রামের ৭০ ভাগ মৎস্য চাহিদা পুরন করা যায়। বছরে প্রায় আড়াই শ’ কোটি টাকার মৎস্য উৎপাদন হয় এ প্রকল্পের পানি দিয়ে। নদীর তীরবর্তী ২০-২২ হাজার জেলে পরিবারের জীবন-জীবিকা অন্ধকারের মুখে পড়বে।

বিলিন হয়ে যাবে বিরল প্রজাতির মাছ ও পশু-পাখি। সামুদ্রিক লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে ধ্বংস হবে সবুজ বনায়ন। দেখা দেবে পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্যহীনতা। বেকার হয়ে যাবে লক্ষাধিক কর্মজীবী মানুষ। সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ অঞ্চলের প্রায় অর্ধকোটিরও বেশি মানুষ।

ফেনী নদীর বালু মহাল ইজারার মাধ্যমে প্রতিবছর সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। ভারতের সাথে চুক্তি হওয়ায় এ নদীতে পানি সঙ্কটের কারণে বালি উত্তোলন প্রক্রিয়ায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। হুমকির মুখে পড়বে চট্টগ্রাম ও ফেনীর হাজার হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।

জানা গেছে, মিরসরাই, রামগড়, মাটিরাঙ্গা, উত্তর ফটিকছড়ি, ফেনীর বুক চিরে প্রবাহমান ফেনী নদীতে পানি প্রবাহ এখন প্রায় সর্বনি¤œ পর্যায়ে। মিরসরাই সীমান্ত অতিক্রম করে ফেনী নদী থেকে ভারতের পানি উত্তোলন এখনো অব্যাহত রেখেছে ভারত। এতে করে বাংলাদেশের প্রায় সহ¯্রাধিক গ্রাম মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। গ্রীষ্মের শুরুতে পানির প্রবাহ অস্বাভাবিক ভাবে হ্রাস পেয়ে প্রায় এক হাজারেরও বেশি গ্রাম এখন ধু-ধু বালুচর আর মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার পথে। অথচ কোনো চুক্তি ছাড়াই একতরফাভাবে ভারত ফেনী নদী থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্পের মাধ্যমে বিভিন্ন পয়েন্টে দিয়ে প্রায় দুই থেকে আড়াই কিউসেক পানি তুলে নিচ্ছে।

বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি রামগড় উপজেলার লাচারী পাড়া, অপরদিকে ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমার বৈষ্ণবপুর সীমান্তে ও বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি রামগড় পৌরসভার বল্টুরামটিলা, অপরদিকে ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমার কাঁঠালছড়ি এবং বাংলাদেশের মহামনি পাড়া, অপর দিকে ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমার দোলবাড়ী, মিরসরাইয়ের অলিনগর এলাকায় এ ধরনের বিভিন্ন পয়েন্টে ভারতের প্রায় ২০-২৫টি লো-লিফট উচ্চমান ক্ষমতা সম্পন্ন ছোট-বড় বিদ্যুৎচালিত পাম্প হাউস রয়েছে। প্রতিটি পাম্প হাউসের জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের জন্য ট্রাসফরমার বসানো হয়েছে।

মিরসরাই পানিসম্পদ উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ডা: জামশেদ আলম বলেন, এমনিতে গত এক যুগ ধরে ফেনী নদী থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে পানি তুলে নিচ্ছে ভারত। এখন আবার ভারতকে ফেনী নদীর পানি দিতে চুক্তি হয়েছে। নদী তো নদী থাকবে না, ধু ধু বালুচর হয়ে যাবে। পানিচুক্তির এ সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিলের জোর দাবি জানান।

https://channelkhulna.tv/

সারাদেশ আরও সংবাদ

সম্পর্ক ভালো রাখতে চাইলে হাসিনাকে ফেরত দিতে হবে

গোপালগঞ্জে কাভার্ডভ্যান চাপায় পুলিশের এসআই নিহত

নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার: উপদেষ্টা আসিফ

পিরোজপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ২ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় ডাকাতি প্রস্তুতি কালে তিন জন ভূয়া র‍্যাব সদস্য গ্রেফতার

সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা, মা-মেয়ে আটক

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।