বাঙালি জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি। শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়ার ৫২ বছর পূর্তি হলো আজ। ১৯৬৯ সালের এই দিনে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
দিবসটি স্মরণে ডাক অধিদপ্তর স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তার দপ্তরে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট ও ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন।
এ ছাড়া ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড উদ্বোধন করা হয়। মন্ত্রী এ-সংক্রান্ত একটি সিলমোহর ব্যবহার করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের মহানায়ক। ২৩ বছরের আপসহীন সংগ্রামের কঠিন পথ বেয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বিস্ময়কর নেতৃত্বের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
‘বাংলার স্বাধীনতার পেছনে রয়েছে জনগণের মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৩ বছর পাকিস্তানের জেলে থাকার ঘটনা। বিশ্বের কোনো নেতা জনগণের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেননি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলার নয়নমণি, বঙ্গশার্দূল, অবিসংবাদিত নেতা, বাঙালির মুক্তিদাতাসহ বিভিন্ন নামে ভূষিত করা হলেও অর্পূণ ছিল জাতির পিতার উপাধি। আর সে অপূর্ণতা পূরণ হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে। আর ইতিহাস হয়ে গেল সেদিনের তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত গণসংবর্ধনা সমাবেশ।
‘যে মানুষটি শুধু পূর্ব বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা, স্বাধিকারের জন্য তার জীবনের মূল্যবান গুরুত্বপূর্ণ সময় জেলে কাটিয়েছেন; অকুতোভয় যার প্রতিটি উচ্চারণ, তাকে গণ উপাধিতে ভূষিত করার বিষয় সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’
ঐতিহাসিক কারণেও উপাধি দেয়া ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের কর্তব্য ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে নতুন উপাধিতে ভূষিত করার। আগরতলা মামলা থেকে মুক্তিলাভের পর রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানকে দেয়া সে গণসংবর্ধনায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষের উপস্থিতিতে তৎকালীন ডাকসুর ভিপি ও সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ ঘোষণা করেন “আজ থেকে তিনি আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান”।’
মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ মুজিবুর যখন বঙ্গবন্ধু, তখন তিনি হয়ে ওঠেন বাংলার প্রকৃতির বন্ধু, বাংলার ভাষা, কৃষ্টি সংস্কৃতির বন্ধু, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বন্ধু, জাতীয়তাবোধের বন্ধু, মুক্তিসংগ্রামের বন্ধু। সুতরাং একমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানই “বঙ্গবন্ধু”।’
এই স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটাকার্ড মঙ্গলবার থেকে ঢাকা জিপিওর ফিলাটেলিক ব্যুরো এবং পরে দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।