বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে শর্ত সাপেক্ষে কোনো আলোচনায় যেতে চায় না সরকার ৷ ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধের কোনো দাবি সরকার মেনে নেবে না।
সম্প্রতি রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামী দলের নেতারা।
তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন বন্ধের জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। কঠোর আন্দোলনের ঘোষণাও দিয়ে রেখেছেন তারা।
এরই মধ্যে গত শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়।
কুষ্টিয়ার এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকারী ওই সংগঠনগুলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে ৷ তবে তারা আলোচনা করতে চাইলেও ভাস্কর্য তৈরি বন্ধের দাবিতে অনড় রয়েছে। এই দাবি নিয়েই তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান বলে জানা গেছে ৷ বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর সঙ্গেও ওই সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বৈঠক হতে পারে বলেও গুঞ্জন রয়েছে ৷ তবে এই বৈঠকের বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। যেটা শুনেছেন সেটা যারা বৈঠক করতে চান, তাদের দিক থেকে বলা হয়ে থাকতে পারে। আমার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে কেউ কিছু বলেনি। তারা আমার কাছে কোনো বৈঠকের প্রস্তাবও দেয়নি। ”
এ দিকে সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরির বিরোধিতা ও বন্ধের দাবি এবং ভাঙচুর বাংলাদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের ওপর আঘাত।
সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরির অবস্থান থেকে তারা সরে আসবেন না। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও সরকারের অবস্থান কঠোর ও অনড়।
এদিকে ভাস্কর্য বিরোধীরা আলোচনার কথা বললেও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধের দাবিতে অনড় বলে জানিয়েছে। এই দাবি নিয়েই তারা সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে দেখা করতে চান।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ও সরকার কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। ভাস্কর্য বিরোধিতাকারীরা যদি তাদের অবস্থান থেকে সরে না আসে তাহলে এ নিয়ে আলোচনার কী আছে। তাদের শর্ত মেনে নেওয়ার জন্য আলোচনা হতে পারে না। পূর্ব শর্ত দিয়ে কোনো আলোচনা হয় না। তবে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখছেন। এ বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তিনিই নেবেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে জানতে চাওয়া হলে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল বাংলানিউজকে বলেন, “আমার সঙ্গে তাদের আলোচনার কোনো কথা হয়নি। তারা প্রধানন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য চিঠি দিয়েছেন শুনেছি। প্রধানমন্ত্রী চিঠি পেয়েছেন কি না সেটাও আমি জানি না। ”
সংগঠনগুলো ভাস্কর্য স্থাপন বন্ধের যে দাবি জানিয়ে আসছে, তাতেই তারা অনড়। এই পরিস্থিতিতে সরকার আলোচনা করবে কি না, জানতে চাওয়া হলে ধর্মপ্রমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী দেখছেন ৷ এ ব্যাপারে যা করার, যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তিনিই নেবেন। ”