গ্লোব বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা বঙ্গভ্যাক্সের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদন দিতে সরকারকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান সোমবার এই নোটিশ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালককে এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নোটিশ বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, গ্লোব বায়োটেক কর্তৃক উদ্ভাবিত বঙ্গভ্যাক্স ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গতবছর ২৮ ডিসেম্বর অনুমোদন দেয়। এরপর মানবদেহে পরীক্ষামূলক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্ব ১ এবং ২ এর জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের কাছে নৈতিক অনুমোদনের জন্য গত ১৭ জানুয়ারি আবেদন করা হয়। পরবর্তীতে বিএমআরসি এর চাহিদা অনুযায়ী গত ১৭ ফেব্রুয়ারি গ্লোব বায়োটেক সংশোধিত রিসার্চ ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেয়। কিন্তু দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে বিএমআরসি সম্পূর্ণ নীরব থেকেছে। বাংলাদেশি ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা চালানোর জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি। উপরন্তু বিএমআরসি একেক সময় একেক রকম বক্তব্য দিয়েছে যা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাদের এই বক্তব্যে দেশের মানুষ দেশে উৎপাদিত ভ্যাকসিন নিয়ে আশাহত হয়েছে। সর্বশেষ গত ২২ জুন বিএমআরসি গ্লোব বায়োটেককে একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির ট্রায়াল করতে হবে। তবেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদন বিষয়ে পরবর্তী চিন্তা করবেন তারা।
নোটিশে বলা হয়, বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে পরীক্ষা চালাতে হলে থার্ড পার্টি রিসার্চ ল্যাবের প্রয়োজন, যা বাংলাদেশে নেই। একারণে গ্লোব বায়োটেক বানর এবং শিম্পাঞ্জির শরীরে পরীক্ষা চালানোর জন্য ভারত ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান কথা বলেছে। কিন্ত এটা করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
নোটিশে আরো বলা হয়, ফাইজার ও মডার্নার টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার এবং কর্তৃপক্ষ একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে ভ্যাকসিন তৈরি ও তা প্রয়োগের উপযোগী করে তুলেছে। বঙ্গভ্যাক্স একটি নিউ জেনারেশন টেকনোলজি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমেরিকা এবং জার্মানির ফাইজার ও মডার্না টিকা উৎপাদন করা হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন না দিয়ে বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে ট্রায়ালের শর্ত জুড়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে এই ভ্যাকসিনটি যাতে উৎপাদন করতে বা অনুমোদন পেতে আরো অনেক সময় অতিবাহিত হয় এবং এটি যাতে আলোর মুখ না দেখে। বিএমআরসি এর ধীরে চলো নীতি ও নিষ্ক্রিয়তা ১৭ কোটি মানুষের জীবন রক্ষার সংবিধানিক অধিকার লংঘন করেছে।