সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বাউ মুরগি: ফার্মে পালন করা হলেও স্বাদে যেন দেশি মুরগি | চ্যানেল খুলনা

বাউ মুরগি: ফার্মে পালন করা হলেও স্বাদে যেন দেশি মুরগি

খামারে পালন করা হলেও দেখতে আর স্বাদে- গুণে প্রায় দেশি মুরগির মতোই – এমন এক মুরগির প্রজাতি উদ্ভাবনও করেছেন বাংলাদেশের একদল গবেষক। আর তা করা হয়েছে দেশি মুরগির জাত থেকেই।
‘বাউ ব্রো মুরগি’ বা ‘বাউ মুরগি’ নাম দিয়ে নতুন জাতের এই মুরগির দুটি স্ট্রেইন বা জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ।

এই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আশরাফ আলী (অবসরপ্রাপ্ত) ও অধ্যাপক ড. বজলুর রহমান মোল্যা।
অধ্যাপক ড. বজলুর রহমান মোল্যা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ”অনেকগুলো স্থানীয় জাতের জার্মপল্গাজম ব্যবহার করে আমরা দুইটা জাত উদ্ভাবন করতে পেরেছি, যেগুলো ফার্মে পালন করা সম্ভব। এগুলোর স্বাদ প্রায় দেশি মুরগির মতোই, সুস্বাদু।”
প্রচলিত ব্রয়লার মুরগির মতোই ঘরে এগুলো লালন-পালন করা যাবে। ছয় সপ্তাহ বা দেড়মাস বয়স হলেই সেগুলো বাজারজাত করা যাবে।
বর্তমানে সীমিত আকারে বাণিজ্যিকভাবে এই মুরগি বাজারজাত করা শুরুও হয়েছে।
বাউ সাদা ও বাউ রঙিন
গবেষকরা যে দুইটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে, তার নাম দেয়া হয়েছে ‘বাউ সাদা’ আর ‘বাউ রঙিন’। অর্থাৎ একটি মুরগি সাদা রঙের হয়ে থাকে, আরেকটা রঙিন। সাদা বাউ প্রচলিত ব্রয়লার মুরগির চেয়ে একটু শক্ত। তবে রঙিন জাতটির স্বাদ একেবারে দেশি মুরগির মতো।
দেড় মাস সময়ে একেকটা মুরগির ওজন হয়ে থাকে গড়ে ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত।
অধ্যাপক ড. বজলুর রহমান মোল্যা বলছেন, ”দেশি মুরগির জাত থেকে এগুলো উদ্ভাবন হওয়ায় আমাদের দেশের আলো বাতাসে এরা সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এদের রোগ-বালাই কম হয়। অতিরিক্ত টিকা বা অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয় না।”
ঢাকার ধানমণ্ডির একজন বাসিন্দা, নাজমা আক্তার অনলাইন ভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট থেকে এই মুরগি কিনে খেয়েছেন।
”মাংসটা দেশি মুরগির মতোই কিছুটা শক্ত, অনেকটা একই রকম স্বাদ। তবে বাজারে দেশি মুরগির যেরকম দাম, তারে চেয়ে দামে বেশ কম পড়ে।”
তিনি জানান, পরিবারের যেসব সদস্যরা ব্রয়লার মুরগি খেতে পছন্দ করেন না, তারাও এই মুরগির মাংস বেশ মজা করে খেয়েছেন।
যেভাবে গবেষণার শুরু
অধ্যাপক মোল্লা জানিয়েছেন, তারা বিকল্প এই জাতের উদ্ভাবনের কাজ শুরু করেন ২০০২ সালে।
”অনেকে ব্রয়লার মুরগি খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু দেশি মুরগির যোগান তো কম। তখন আমরা চিন্তা করলাম, আমাদের স্থানীয় মোরগ-মুরগি থেকে যদি এমন একটা স্ট্রেইন উদ্ভাবন করা যায়, যেটি ফার্মে লালনপালন করা যাবে, তাহলে আমিষের বিকল্প একটা উৎস তৈরি হবে” – তিনি বলছেন।
বিদেশি জাতের সংমিশ্রণে ‘সোনালি’ নামের একটি জাত এর আগে উদ্ভাবিত হলেও, সেটির স্বাদ দেশি মুরগির মতো নয়।
ফলে গবেষকরা চাইছিলেন এমন একটি জাত উদ্ভাবন করতে, যা দেশীয় মুরগির প্রজাতি থেকে আসবে। ফলে সেখানে দেশি মুরগির স্বাদ যেমন পাওয়া যাবে, তেমনি বাংলাদেশি আবহাওয়ায় তাদের টিকে থাকার ক্ষমতা হবে বেশি।
২০০৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএনআরসি) সহায়তায় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৪ সালে এসে তারা ঘোষণা করেন যে, স্থানীয় মুরগির জাত থেকে তারা খামারে লালনপালনের উপযোগী দুইটি জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন।
বর্তমানে প্রতি মাসে এই জাতের মুরগির ৩০ হাজার বাচ্চা উৎপাদন করা হচ্ছে। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কেটে গেলে তারা মাসে দুই লাখ বাচ্চা উৎপাদন করতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছেন।
তবে এই জাত দুইটি ব্রয়লার মুরগির মতোই – যা শুধুমাত্র মাংসের জন্যই উৎপাদন করা যাবে, এবং এসব মুরগি থেকে ডিম হবে না।
এই জাত দুইটি বাণিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে দিতে এই বছরের শুরুতে একটি প্রকল্পও নেয়া হয়েছে।
এসব জাতের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে, ব্রয়লারের মতো বিদেশ থেকে মুরগির বাচ্চা আমদানি করতে হয় না। রোগে মৃত্যুর হারও অনেক কম।
বাউ মুরগি-৩
গ্রামে লালন-পালনের জন্য আসছে আরেকটি জাত উদ্ভাবনের কাজ করছেন গবেষকরা। নতুন এই জাতের নাম হবে বাউ মুরগি-৩।
অধ্যাপক ড. বজলুর রহমান মোল্যা বলছেন, ”নানা কারণে দেশি মুরগি তো কমে যাচ্ছে। তাই আমরা নতুন যে জাতটি তৈরি করছি, সেটি কোনরকম অতিরিক্ত যতœ ছাড়াই গ্রামে লালন-পালন করা যাবে।”
নতুন জাতটি ছড়িয়ে দিতে পারলে প্রাকৃতিকভাবে দেশি মুরগির লালনপালন অনেক সহজ হবে বলে তিনি বলছেন।
খামারের মোরগ-মুরগির প্রকারভে
বাংলাদেশে খামারে এখন মূলত চার ধরণের মোরগ-মুরগির লালন-পালন করা হয়।
ব্রয়লার
লেয়ার
কক
সোনালী
এখন এই তালিকায় নতুন করে যোগ হচ্ছে বাউ মুরগি।

শুধুমাত্র মাংসের জন্য যেসব মুরগি লালনপালন করা হয়, সেগুলো ব্রয়লার। ডিম পাড়া মুরগিকে বলে লেয়ার। তবে ডিম পাড়ার বয়স শেষ হয়ে গেলে সেগুলোকেও মাংসের জন্য বিক্রি করা হয়ে থাকে।
মূলত কানাডা এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর মুরগির জাত থেকে লেয়ার বা ব্রয়লারের জাত তৈরি করা হয়।
মিশরের ফায়োমিন মুরগির সঙ্গে আমেরিকান রোড আইল্যান্ড মোরগ মিশিয়ে যে জাত তৈরি করা হয়, সেটার নাম দেয়া হয় সোনালী। এগুলোও খামারে বড় করা হয়। এগুলো যেমন মাংসের জন্য বিক্রি করা হয়, আবার অনেকে ডিমের জন্য লালন পালন করেন। এগুলোর ডিম অনেকটা দেশি মুরগির ডিমের মতোই হয়।
প্যারেন্টিং ফার্ম থেকে এরকম একদিনের মুরগির বাচ্চা বড় করে সেগুলোকে ব্রয়লারের মতোই লালনপালন করে বিক্রি করা হয়।
কক বা পাকিস্তানি মুরগি বলে যেটা পরিচিত, সেটাও আসলে খামারে পালন করা মোরগ।
ডিম পাড়া মুরগির সঙ্গে যখন বাচ্চা ফোটানো হয়, যেখানে প্রথমেই ছেলে-মেয়ে জাত আলাদা করে ফেলা হয়। মুরগি বড় হয়ে হয় ডিম পাড়া লেয়ার। আর মোরগগুলোকে আলাদাভাবে বড় করে পরবর্তীতে বিক্রি করা হয়, যা অনেকের কাছে কক বা পাকিস্তানি মুরগি বলেও পরিচিত।
গবেষকরা বলছেন, একসময় মিশরীয় স্ত্রী জাতের মুরগির বাচ্চা পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হতো। এই কারণে এগুলোকে অনেকে পাকিস্তানি মুরগি বলে চেনেন। তবে এখন এগুলো বাংলাদেশেই উৎপাদিত হচ্ছে।

https://channelkhulna.tv/

কৃষি ভাবনা আরও সংবাদ

ডুমুরিয়া সরিষার ভালো ফলনের সম্ভাবনা

ফকিরহাটে কৃষকের ৭০০ টমেটো গাছ কেটে দিয়েছে দৃর্বৃত্তরা।

ডুমুরিয়ায় সবজির দাম কমলেও চড়া আলু-রসুনের বাজার

ডুমুরিয়ায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

ফকিরহাটে এসএসিপি’র টমোটো চাষ পরিদর্শনে ইফাদ প্রতিনিধি দল

প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীর মাঝে মঠবাড়িয়ায় রবিশস্যের বীজ বিতরণ

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।