১০ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের পর এবার ৫৯টি অনিবন্ধিত ও অবৈধ আইপিটিভি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি এ ৫৯টি অবৈধ ও অনিবন্ধিত আইপি (ইন্টারনেট প্রোটোকল) টিভি বন্ধ করেছে। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বিটিআরসি।
আইপিটিভি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় স্পষ্ট করতে এই বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টেলিভিশনে প্রচারিত কনটেন্ট ইন্টারনেট প্রটোকল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সম্প্রচার করার প্রক্রিয়া হলো আইপিটিভি। বিটিআরসি কেবল লাইসেন্সধারী আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইপিভিত্তিক ডাটা সার্ভিসের (স্ট্রিমিং সেবা, আইপিটিভি, ভিডিও অন ডিমান্ড) অনুমোদন দিয়ে থাকে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে ডোমেইন কিনে ফেইসবুক বা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে আইপিটিভি চালাচ্ছে, যার কোন বৈধ অনুমোদন নেই। অনুমোদন ছাড়া সম্প্রচার অনৈতিক এবং টেলিযোগাযোগ আইনের লংঘন।’
স্পষ্টত সরকার অনলাইনে বৈধতা না নিয়ে পরিচালিত গণমাধ্যমের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। এর আগে হাইকোর্ট এক আদেশে অনিবন্ধিত সব অনলাইন নিউজপোর্টাল বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
উচ্চ আদালত থেকে এই আদেশ আসার পর তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ভূতুরে গণমাধ্যম থাকার দরকার নেই। ডিক্লারেশন নিয়েও কেবল বিজ্ঞাপন পাওয়ার দিন ছাপা হয়, এমন পত্রিকা চালু রাখার পক্ষে নন তিনি।
নিউজপোর্টালের মতোই অনলাইনে টিভি কনটেন্ট প্রচারের প্রবণতাও তৈরি হয়েছে গত কয়েক বছরে। এগুলোর সম্পাদনা নীতি নিয়ে প্রশ্ন আছে, যার যা ইচ্ছা তাই প্রচার করে থাকে। বিভিন্ন আইপি টিভির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও আছে।
বিষয়টি সামনে আসে আলোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পর। তার আইপি টিভি জয়যাত্রা সেই রাতেই বন্ধ করে দেয়া হয়।
এরপর সরকার আইপিটিভিরও নিবন্ধন চালুর পরিকল্পনার কথা বলে। তথ্যমন্ত্রী জানান, নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে অনুমোদন দেয়া হয়নি।
বিটিআরসি জানিয়েছেন, অনিবন্ধিত আইপিটিভি বন্ধ করা হলেও এর সঙ্গে বিটিআরসির আইপিভিত্তিক ডাটা সার্ভিসের জন্য অনুমোদন পাওয়া আইএসপি (ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান) প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানগুলো আগের মতোই নানা আধেয় প্রচার করতে পারবে।
প্রতিটি চ্যানেল বা প্রোগ্রাম বা কন্টেন্ট প্রচারে প্রয়োজনীয় চুক্তি বা অনুমোদন বা ছাড়পত্র সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করতে হবে বলেও জানিয়েছে বিটিআরসি।
লাইসেন্সধারী আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোকেই আইপিভিত্তিক ডাটা সার্ভিসের অনুমোদন দেয় বিটিআরসি।
বিটিআরসির কাছ থেকে আইপিটিভি সেবার অনুমোদন প্রাপ্ত আইএসপি অপারেটররা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদিত স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার শুধু তাদের গ্রাহকদেরকেই দেখাতে পারবে। তবে প্রতিটি চ্যানেলকে প্রোগ্রাম বা কন্টেন্ট প্রচারে প্রয়োজনীয় চুক্তি,অনুমোদন বা ছাড়পত্র সংশ্লিষ্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিককালে লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে ডোমেইন কিনে বা ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে জনগণকে আইপিটিভি প্রদর্শন করছে যার কোনও বৈধ অনুমোদন নেই। অনুমোদন ছাড়া উক্ত সম্প্রচার অনৈতিক এবং টেলিযোগাযোগ আইনের লঙ্ঘন। যেসব আইপি টিভি বন্ধ করা হয়েছে সেসবের কার্যক্রমের সঙ্গে বিটিআরসির আইপিভিত্তিক ডাটা সার্ভিসের জন্য অনুমোদন প্রাপ্ত আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।