চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃসারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছে নৌযান শ্রমিকরা। গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। বাংলাদেশ জাহাজ শ্রমিক ফেডারেশনের ১৪ দফা ও নৌযান শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের ধর্মঘট চলবে। শুক্রবার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ১১ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছি। লঞ্চ মালিকপক্ষ শুধু আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন করেনি। গত বুধবারও সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু আবারও আশ্বাস। তাই শ্রমিকরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধর্মঘটে যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়ায় আমরা ধর্মঘটে যেথে বাধ্য হয়েছি।
এদিকে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ধর্মঘটের বিষয় অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার সদস্য জালাল বলেন, নৌযান শ্রমিকদের মূল দাবিগুলো মেনে নিয়ে লঞ্চ মালিকপক্ষ ২০১৬ সালে নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে পাঁচ বছরের একটি চুক্তি করেছিল। সে চুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হবে। তাই তাদের ধর্মঘটে যাওয়া অযৌক্তিক।
তবে এ ব্যাপারে ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, ওই সময় ১৫টি দাবির মধ্যে শুধু বেতন স্কেল ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছিল। বাকি ১৪টি দাবি তো পূরণ করা হয়নি। তিনি বলেন শ্রমিকরা বারবার আশ্বাসে বিশ্বাসী নয়, বাস্তবায়ন দেখতে চায়।
এদিকে বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশনের খুলনার সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শুক্রবার রাতে জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা থেকেও নৌপথের বিভিন্ন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। পরবর্তী ঘোষনা না আসা পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের ঘোষিত ১১ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের খোরাকি ভাতা ফ্রি করতে হবে ও ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করতে হবে। মাস্টার ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় ও ডিপিডিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সব অনিয়ম বন্ধ করতে হবে এবং কোর্স চলাকালে শ্রমিকদের ছুটি বাধ্যতামূলক করতে হবে। নৌ শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসালয় করতে হবে। নৌপথে মোবাইল কোর্টের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নৌ শ্রমিকের মৃত্যু হলে ১২ লাখ টাকা মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ভারতগামী শ্রমিকদের লোকাল এজেন্টের মাধ্যমে ল্যান্ডিং পাস সার্ভিস ভিসা ও জাহাজের ফ্রিজিং ব্যবস্থা না থাকায় তাঁদের (শ্রমিকদের) সুবিধা মতো স্থানে বাজার ও অন্যান্য কাজের জন্য আলাদা নৌকার ব্যবস্থা করতে হবে।