করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হোটেল কোয়ারেন্টিনসহ বিভিন্ন শর্তারোপ করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ কারণে ২০ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত সৌদি আরবগামী সব ফ্লাইট স্থগিত রাখে বাংলাদেশ বিমান। শনিবার (২৯ মে) সেই ফ্লাইট চালু হয়েছে। প্রথম দিন বিমানের দুই ফ্লাইটে সৌদি আরব গেছেন ২৫৯ যাত্রী।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিমান বাংলাদেশ জানায়, শনিবার দুপুর সোয়া ৩টায় ১৩৫ যাত্রী নিয়ে সৌদির দাম্মামে ও সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় ১২৪ যাত্রী নিয়ে জেদ্দায় ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান। উভয় ফ্লাইট নিরাপদে স্ব স্ব গন্তব্যে অবতরণ করেছে। যাদের ভিসার মেয়াদ মে মাসেই শেষ হয়ে যাবে কেবল তারাই বিমানের এই ফ্লাইটে সৌদি যেতে পারছেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার ভিত্তিতে টিকেট বিক্রি করছে সংস্থাটি।
বিমান আরও জানায়, ২০ থেকে ২৮ মে ফ্লাইট বন্ধের কারণে যারা টিকেট কেটেও ভ্রমণ করতে পারেনি তাদের নতুন করে টিকেট ইস্যু করতে কোনো ধরনের অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হচ্ছে না।
এর আগে সৌদি সরকারের কড়া বিধিনিষেধের কারণে ৯ দিন ফ্লাইট বন্ধ রাখে বিমান। পরে বিমানের সহযোগী সংগঠন বিমান হলিডেইজের মাধ্যমে সৌদিতে কোয়ারেন্টিনের হোটেল বুকিং ব্যবস্থা চালু করে ফ্লাইট পুনরায় চালু করা হয়।
সম্প্রতি এক আদেশে, ২০ মে থেকে বাংলাদেশ থেকে সৌদিগামী প্রবাসী শ্রমিকদের প্রবেশে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটির সরকার।
যারা করোনাভাইরাসের টিকা নেননি, তারা সৌদি আরবে প্রবেশ করলে সাত দিন হোটেলে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে হোটেলের খরচ নিজেকেই বহন করতে হবে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায়, সে দেশে যাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এলেই কেবল ঢাকা থেকে যাত্রীরা ফ্লাইটে উঠতে পারবেন। সৌদিতে পৌঁছানোর পর আরও দুবার করোনা পরীক্ষা করতে হবে।
প্রথমবার পরীক্ষা করতে হবে সৌদি আরবে পৌঁছানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। ষষ্ঠ দিনে আবারও করোনা পরীক্ষা করা হবে। করোনা পরীক্ষা করার খরচ যাত্রীকেই বহন করতে হবে। দুবার পরীক্ষা নেগেটিভ রিপোর্ট এলে হোটেলে কোয়ারেন্টিন থেকে সপ্তম দিন বাসায় যাওয়া যাবে।
এ ছাড়া যারা পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছেন তাদের টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ফাইজার-বায়োএনটেকের দুই ডোজ, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ, মডার্নার দুই ডোজ এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার এক ডোজ যারা নিয়েছেন তারা হোটেলে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার বদলে বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকার সুবিধা পাবেন।
প্রথমবারের মতো সৌদি প্রবাসীদের সে দেশে যাওয়ার আগে হেলথ ইনস্যুরেন্স করাতে হবে। করোনা হলে ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা ব্যয় বহন করার বিষয়টি ইনস্যুরেন্সে স্পষ্ট থাকতে হবে।
ভ্রমণ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে শাস্তি হিসেবে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছে সৌদি সরকার। এ সংক্রান্ত এক আদেশে বলা হয়েছে, কেউ যদি করোনাভাইরাস ছড়ায় তাকে ৫ বছরের জেল এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। যদি সেই ব্যক্তি প্রবাসী হন, তবে তাকে শাস্তি দেওয়ার পর সৌদি আরব থেকে বিতাড়িত করা হবে। তিনি আর কোনো দিন সৌদি আরবে আসতে পারবেন না।