এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ছিল পুকুর ভরা মাছ, গোয়াল ভরা গরু আর গোলা ভরা ধান। কালের বিবর্তনে এই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছিলো।
বর্তমানে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ানে মৎস্য দপ্তরের খাল খনন ও অভয়াশ্রম স্থাপনের ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ যা প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছিলো তা ক্রমান্বয়ে ফিরে আসছে।
এ জেলায় খাল-বিল, পুকুর, নদী, বাওড় ও প্লাবনভূমি রয়েছে প্রচুর পরিমানে।এখন এসব জলাশয়ে বাইন, নয়নতারা, গজাল, চেলা, মলা, খোলসে, কই, চিংড়ি, চিতল, সিং, মাগুর, বোয়াল, ডাঁড়কি, ছলং- এ মাছগুলো নদ-নদী, খাল-বিলে দেখা যেতে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুমে নিম্নবিত্তের মানুষেরা এ মাছগুলো ধরে নিজের চাহিদা মেটানোসহ বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
মৎস্যজীবী সন্জয় বিশ্বাস জানান গত বছরের চেয়ে এ বছর দেশি মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কার্প জাতীয় মাছ চাষ করে বাজারের চাহিদা মেটাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি দিলে এ উপজেলায় বিলুপ্ত প্রায় সব মাছ সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
ডুমুরিয়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আবুবকর সিদ্দিক বলেন দেশীয় মাছ ফিরিয়ে আনার জন্য উপজেলা মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে ৫ টি অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়েছে। গত ৫ বছরে প্রায় ২০ টি খাল খনন করা হয়েছে। দুই শতাধিক মোবাইল
কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধ নেট পাটা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে খাল বিলে দেশীয় প্রজাতীর মাছের আধিক্য দেখা যাচ্ছে।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব কুমার পাল জানান, মৎস্য সম্পদ অধিদপ্তর অভয়াশ্রমের মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তিনি আরো বলেন, ডুমুরিয়ার হাজিবুনিয়া বিলে দোয়াইনিয়ার খাল খনন চলছে।
এছাড়া চুকনগর গ্যাংরাইল মরা নদী খনন করা হচ্ছে। এসব খাল দেশীয় প্রজাতীর মাছের প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করবে। ফলে দেশীয় মাছ উপজেলা তথা দেশের মানুষের খাবার প্লেটে ফিরে আসবে।