খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক কাউন্সেলিং এন্ড মোটিভেশন শীর্ষক কর্মশালার দ্বিতীয় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯.১৫ মিনিটে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত এ কর্মশালার দ্বিতীয় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন হচ্ছে নিজেকে প্রস্তুত করে নেওয়ার উত্তম সময়। দীর্ঘ ১২ বছরের শিক্ষাজীবন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে বেশ কিছু পার্থক্যের মুখোমুখি হতে হয় নবীন শিক্ষার্থীদের। এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা স্কুল-কলেজ থেকে আলাদা। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে অল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে একই একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে সব ডিসিপ্লিনে ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া হয়। ছাত্ররাজনীতি না থাকলেও নিজেকে বিকশিত ও নেতৃত্বগুণে সমৃদ্ধ করার জন্য এখানে অনেক সংগঠন রয়েছে। এখানকার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা দক্ষ দেশপ্রেমিক ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু লেখাপড়া বা আভিধানিক জ্ঞান অর্জনের জন্য নয়, এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে হবে। দেশ ও জাতির জন্য নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রিন-ক্লিন ক্যাম্পাসে পরিণত করতে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান। পরে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথাগতভাবে নবাগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। উক্ত শপথবাক্যে সন্ত্রাস, ছাত্ররাজনীতি, র্যাগিং ও মাদককে না বলার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ। সভাপতিত্ব করেন আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মতিউল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইকিউএসির উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্য রিসোর্স পারসন হিসেবে ‘কী টু সাকসেস ইন হায়ার এডুকেশন’ শীর্ষক একটি সেশন উপস্থাপন করেন। এছাড়াও কর্মশালায় ‘টিচিং লার্নিং অ্যাপ্রোচেস ইন হায়ার এডুকেশন’, ‘এডুকেশন সিস্টেম, রুলস এন্ড রেগুলেশন্স ইন কেইউ’, ‘এক্সেস টু রিসোর্স, ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি ইন কেইউ’ এবং ‘স্টুডেন্ট সাপোর্ট সার্ভিসেস ইন কেইউ’ শীর্ষক আরও ৪টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালাটির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষে ভর্তিকৃত নবাগত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সফলতা অর্জনের বিভিন্ন দিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়মকানুন, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ, শিষ্টাচার, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন দিকে আলোকপাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন মুদ্রিত সমন্বিত প্রসপেক্টাস বিতরণ করা হয়। কর্মশালার দ্বিতীয় দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুল এবং আইন স্কুলের আওতাধীন ৬টি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।