করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় বৈশ্বিক মহাপরিকল্পনা প্রকাশ করতে যাচ্ছে শীর্ষ অর্থনীতির সাত দেশ। লক্ষ্য, বিশ্বজুড়ে চলমান মহামারি ও এর কারণে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির পুনরাবৃত্তি ঠেকানো।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনা নির্মূলে নিজেদের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জি সেভেন জোটের নেতারা।
ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালে শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন শনিবার আসবে এ সংক্রান্ত ঘোষণা। এতে মহামারি অবসানে ধারাবাহিকভাবে কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সম্মিলিত বিবৃতি দেবেন নেতারা।
মহামারি পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে সৃষ্ট ভারসাম্যহীনতা ঠেকানোর আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার সম্মেলন উদ্বোধন করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া দরকার ছিল আমাদের। তাহলে বৈষম্যের এক কলঙ্কমোচন করা সম্ভব হতো।’
কর্নওয়ালের সমুদ্র তীরবর্তী কার্বিস বে রিসোর্টে প্রথম দিনের আলোচনা শেষে ইডেন প্রজেক্টে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন নেতারা।
কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত জোট গ্রুপ অফ সেভেন বা সংক্ষেপে জি সেভেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাখোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অংশ নিয়েছেন জোটের এ বারের সম্মেলনে।
এছাড়া আঞ্চলিক জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দুই শীর্ষ রাজনীতিক- ইউরোপীয় কাউন্সিলের চার্লস মিশেল ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনও অংশ নিয়েছেন সম্মেলনে।
মহাপরিকল্পনায় কী থাকছে?
শনিবারের বিশেষ অধিবেশন শেষে ‘কার্বিস বে ডিক্লেয়ারেশন’ ঘোষণা করবেন জি সেভেন নেতারা।
এতে উপস্থিত থাকবেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তেদ্রোস আধানম।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট মানবিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি রোধের লক্ষ্যে যৌথ সমঝোতার ভিত্তিতে নেয়া হয়েছে এ মহাপরিকল্পনা।
মহামারির দেড় বছরে পৌনে ১৮ কোটি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৩৮ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ছোঁয়াচে ভাইরাসটি।
এ অবস্থায় ভবিষ্যতে এমন যে কোনো রোগের অস্তিত্ব আবিষ্কারের ১০০ দিনের মধ্যে সেটি শনাক্ত, চিকিৎসা ও প্রতিরোধে টিকা তৈরির নিশ্চয়তায় কাজ করবে সাত দেশ।
বিশ্বজুড়ে বাড়ানো হবে রোগ পর্যবেক্ষণ এবং জিনোম সিকোয়েন্সিং সক্ষমতা।
ডব্লিউএইচওর শক্তি বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে সব দেশ।
এর আগে করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য ১০০ কোটি ডোজ টিকা বিনা মূল্যে দেয়ার ঘোষণা দেয় জি সেভেন জোট। এর শধ্যে কমপক্ষে ১০ কোটি ডোজ দেবে যুক্তরাজ্য; যুক্তরাষ্ট্র দেবে ৫০ কোটি ডোজ।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, করোনার বিস্তার ঠিকভাবে রোধে ১ হাজার ১০০ কোটি ডোজ টিকা দরকার। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে এবং মহামারির পরিসর কমবে।