তরুণ উদ্যোক্তা কৃষক আশিকুর রহমান মুন্না মাগুরা সদরের জগদল ইউনিয়নের রুপটি গ্রামে বারি -১ জাতের মাল্টা চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখেছেন। বর্তমানে বাগানের প্রতিটি গাছে ঝুলছে সবুজ মাল্টা। মাল্টা সাধারণত বাজারে হলুদ হয় কিন্তু
বারি -১ জাতটি সবুজ রঙের এতে পুষ্টিগুন অনেক বেশি।
তরুণ উদ্যোক্তা কৃষক আশিকুর রহমান মুন্না বলেন, আমি একজন কম্পিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। আমি ভালো কোন চাকরি না পেয়ে আমাদের পতিত জমিতে মাল্টা চাষে আগ্রহী হই। ২০১৬ সালে, আমি যশোরের ঝুমঝুমপুর নার্সারি থেকে ৩৫০ টি চারা সংগ্রহ করে আমার নিজের জমিতে চাষ শুরু করি। প্রথম বছরে আমি সাফল্যের মুখ দেখি। তারপর, সাফল্যের পথে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। আমি ২০১৭ সালে আরেকটি মাল্টা বাগান শুরু করেছি। ২০২০ সালে ২ টি বাগানে মাল্টা চাষ করতে আমার ২- ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমি ৫ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করি।
এবারের আবহাওয়া এ বছর অনুকূল ছিল না। প্রবল বৃষ্টি এবং তীব্র তাপের কারণে মাল্টা ফলের অনেক ফুল বাগানে ঝরে পড়ে গেছে। এবার ফলন কম হওয়ায় বিক্রি কম হবে। আমি আশা করছি যে এবার আমার ২ টি বাগানে ৬০-৭০ মণ মাল্টা থাকবে। যা বিক্রি হবে ২থেকে ৩ লাখ টাকায়। মাল্টার রঙ সবুজ, ভিতরে সাদা, রসে ভরা এবং মিষ্টি। ঢাকার ব্যবসায়ীরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং বাগান থেকে আমাদের মাল্টা নিয়ে যান। এছাড়া টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া ও রাজশাহীতে মাল্টা যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের ফলের চাহিদা ভালো হওয়ায় অনেক স্হানীয় ফল ব্যবসায়ী ফলের বাগানে এসে মাল্টা কিনে বাজারে বিক্রি করেন।। তিনি বলেন, এই চাষের জন্য আমি কৃষি বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছি। আগে এই চাষে আমি
মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের সাবেক উদ্যানতত্ত্ববিদ মো: মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। তারা আমাকে কৃষিকাজের ব্যাপারে নানাভাবে সাহায্য করেছে। আমার বাগান দেখে এখন এলাকার অনেক যুবক মাল্টা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই চাষে আরো ভালো সাফল্য পেতে আমার অনেক পরিকল্পনা আছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জানান, জেলায় এ বছর ১০ হেক্টর জমিতে বারি -১ জাতের মাল্টা চাষ করা হয়েছে। মাল্টা একটি পুষ্টিকর ফল। ফলস্বরূপ, এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে মাগুরার মাটি মাল্টা চাষের জন্য উপযুক্ত। জেলার তরুণদের এই চাষে আরও বেশি করে এগিয়ে আসা উচিত। কৃষি বিভাগ কৃষকদের মাল্টা চাষে উৎসাহিত করছে। অতএব, যদি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাল্টা চাষ করা হয়, তাহলে দেশের অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ হবে।