খুলনা জেলা পরিষদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড ওয়াশ, সাবান ও মাস্ক ক্রয়ের ৫০ লাখ টাকার টেন্ডার সমঝোতার পর এবার মালামাল সরবারহ ছাড়াই কর্মকর্তাদের যোগসাজোসে বিল তুলে নেয়ার পাঁয়তারা চলছে এমন অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে সংস্থাটির ভিতরে-বাইরে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটি হারাতে বসেছে মোটা অংকের অর্থ।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, কোভিড -১৯ (করোনাভাইরাস)-এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় দেশের দরিদ্র জনসাধারণের মধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড ওয়াশ, সাবান ও মাস্ক বিতরণে উদ্যোগ নেয় খুলনা জেলা পরিষদ। ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ টেন্ডার গত ৩ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্রের আহবান করা হয়। ১৯ জানুয়ারি ছিল দরপত্র বিক্রির শেষ দিন। পরের দিন ২০ জানুয়ারি বুধবার বেলা ১টায় ওই দরপত্র জমার শেষ সময় ধার্য করা হয়। দরপত্র উন্মুক্ত করার সময় ছিল বেলা ৩টা পর্যন্ত। তবে টেন্ডার গ্রহণ নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় তা স্থগিত হয়ে যায়। এরপর সোমবার ফের এর দরপত্র গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। শেষ দিন পর্যন্ত ৩০টি দরপত্র বিক্রি হয়। আর নির্ধারিত সময় বেলা ১টার মধ্যে মাত্র ৪টি দরপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে এস এম এন্টারপ্রাইজ ৪৯ লাখ ৯৫ হাজার ৪৩ টাকা, এস আর করপোরেশন ৪৯ লাখ ৯৭ হাজার ৯৮৪ টাকা, সিটি মেডিকেল ৪৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৫৮ টাকা করে রেট জমা দিয়েছেন। তবে বিডি ছাড়াই একটি দরপত্র জমা পড়ে, সেটি হলো লাবিবা এন্টারপ্রাইজ।
সূত্র জানায়, প্রভাবশালীদের হুমকিতে ৩০ ঠিকাদারের ২৬ জনই দরপত্র জমা না দেয়ায় কাজটি পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এস এম এন্টারপ্রাইজ।
নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, তখন টেন্ডার সমঝোতার হলেও টিইসি কমিটি ওই কাজের অনুমোদন দিয়েছে। আর এখন মালামাল বুঝে না পেয়েই বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিল পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা বাগিয়ে নিয়েছেন এক কর্মকর্তা। ফলে প্রতিষ্ঠানটির মোটা অংকের টাকা হারাতে বসেছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে খুলনা জেলা পরিষদের সচিব বিষ্ণু পদ পাল বলেন, ২৭ মার্চ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে আবেদন পেয়েছি। কিন্তু নিচের কর্মকর্তারা যাই করুক না কেন। এভাবে মালামাল বুঝে না পেয়ে বিল পরিশোধ করা সম্ভব না।