মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রতিরোধে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন মালয়েশিয়ার সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমাদ শাহ।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটির অধিকাংশ এলাকায় প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করার একদিন পর সুলতানের কাছ থেকে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে এমন তথ্য বলা হয়েছে।
ইতিমধ্যে সেখানকার অধিকাংশ ব্যবসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও বিপর্যয়ের মুখোমুখি রয়েছে। সোমবারের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের কাছ থেকে অনুরোধ আসার পর ১ আগস্ট থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণায় রাজি হয়েছেন সুলতান আবদুল্লাহ আহমাদ শাহ।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মুহিউদ্দিন বলেন, পার্লামেন্ট স্থগিত থাকবে এবং কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। প্রয়োজন হলে রাজা নতুন আইন সচল করতে পারবেন।
১০ মাস আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মুহিউদ্দিনের সরকার নানা প্রতিকূলতায় পড়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বেসামরিক সরকারের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এটি কোনো সামরিক অভ্যুত্থান না এবং কারফিউ বলবৎ করা হবে না।
মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসার পর সাধারণ নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এমন একসময় তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন, তখন মুহিউদ্দিনের প্রধান জোটমিত্ররা সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এতে সরকার পতন ও আগামী নির্বাচন দেওয়ার প্রয়োজন পড়ত।
মহামারীর মধ্যে নির্বাচন হলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
কঠোর লকডাউনের মাধ্যমে গত এক বছর করোনা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে মালয়েশিয়া। কিন্তু বিধিনিষেধ শিথিল করার পর আক্রান্তের নতুন রেকর্ড গড়ছে।
রাজনৈতিক জীবন সাময়িক বাতিল হলেও এ ঘোষণায় বেসরকারি হাসপাতাল সরকারি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলো রোগীদের চাপ নিতে না পারলে বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে সরকার।
সেনাবাহিনী ও পুলিশের কাছ থেকেও অতিরিক্ত সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানান মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী। করোনা সংক্রমণ কমে গেলেই জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হবে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৩৮ হাজার করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫৫৫ জন।
এ জরুরি ঘোষণা ক্ষমতায় টিকে থাকতে মুহিউদ্দিনের রাজনৈতিক চাল বলে সমালোচকরা দাবি করছেন। এতে সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মাহাথির মোহাম্মদের মেয়ে মারিনা মাহাথির বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে সরকার নিজের ব্যর্থতার জানান দিয়েছে। মহামারী নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। দেশ শাসন ও জনগণের প্রতি খেয়াল রাখতেও তারা ব্যর্থ।