মিয়ানমারে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক সেটি দেখতে চায় বাংলাদেশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল ও রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও দেশটিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে বিবৃতিতে।
সোমবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নীতিতে বিশ্বাসী। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ব্যবস্থা সমুন্নত থাকবে বলে বাংলাদেশ আশা করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পার্শবর্তী বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে আমরা চাই মিয়ানমারে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক। পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনে দুদেশ কাজ করছে। আমরা আশা করি এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
মিয়ানমারে শীর্ষ নেতাদের আটকের পর বিরাজমান পরিস্থিতি বাংলাদেশ পর্যবেক্ষণ করছে বলে সকালে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
সোমবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেলিফোনে বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির নেত্রী অং সান সু চিসহ দেশটির শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর এক বছরের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেনাবাহিনী।
সামরিক বাহিনী পরিচালিত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ভাষণে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি এক বছর ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন। আর সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সুয়েকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির বেসামরিক সরকার ও প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েক দিন ধরে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে এসব ঘটনা ঘটল।
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চিসহ শীর্ষ নেতাদের আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
মিয়ানমারে আটক সব নেতাকে ছেড়ে না দিলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে।