ইউরোপীয় দেশগুলোর সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মিয়ানমারের ১০ সামরিক নেতা ও সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত দুই বাণিজ্যিক সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সোমবার প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয় সংস্থাটি।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইউরোপীয় দেশগুলোতে এই নেতাদের ও বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দের আদেশ দেয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত নেতারা মিয়ানমারে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকে অবমূল্যায়ন, দমনমূলক সিদ্ধান্তসমূহ এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী।
এছাড়া মিয়ানমার ইকোনোমিক হোল্ডিং পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (এমইএইচএল) ও মিয়ানমার ইকোনোমিক করপোরেশন লিমিটেডের (এমইসি) বিরুদ্ধে ‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর (তাতমাদাও) মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবং এর থেকে রাজস্ব নেয়ায়’ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইইউ।
শপিং মল, পানশালা, বিনোদনের ভেন্যু ও তামাকসহ বিভিন্ন বাণিজ্য এই দুই সংস্থা পরিচালনা করে আসছে, যার মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বিপুল অর্থ উপার্জন করছে। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন এই দুইটি বাণিজ্যিক সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এদিকে মিয়ানমারের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) তাদের দৈনিক প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায়, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সোমবার পর্যন্ত দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে অন্তত সাত শ’ ৩৮ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে বন্দী রয়েছে তিন হাজার দুই শ’ ৬১ জন। এছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আরো নয় শ’ ৭০ জনের নামে।
১ ফেব্রুয়ারি তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। সূত্র : আলজাজিরা